আজ- ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  রাত ১২:০১

অগ্নিঝরা মার্চ :: মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস আজ

 

দৃষ্টি নিউজ:

সংগৃহীত ছবি

ঐতিহাসিক ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের ডাকা ছাত্র জনসভায় উপস্থিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ সভায় বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সেদিনই সভা থেকে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের চার নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আসম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ গ্রহণ করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।
ঘোষণা আকারে প্রস্তাব পাঠ করা হয়েছিল -‘৫৪ হাজার ৫০৬ বর্গ মাইল বিস্তৃত ভৌগলিক এলাকার সাত কোটি মানুষের জন্য আবাসভুমি হিসেবে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাস্ট্রের নাম ‘বাংলাদেশ’। এই দেশ গঠন করে নিম্নলিখিত তিনটি লক্ষ্য অর্জন করতে হবে-
১) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে পৃথিবীর বুকে একটি বলিষ্ট বাঙালি জাতি সৃষ্টি ও বাঙালির ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি , সংস্কৃতির বিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।
২) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে অঞ্চলে অঞ্চলে, ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বৈষম্য নিরসন কল্পে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করে কৃষক শ্রমিক রাজনীতি কায়েম করতে হবে।
৩) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে ব্যক্তি, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সহ নির্ভেজাল গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে।
ইশতেহারে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচিত করা হয়।
এদিনের জনসভায় বঙ্গবন্ধু অহিংস-অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে তার বক্তব্যে অবিলম্বে সামরিক আইন প্রত্যাহার, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান। এ দিনই বাংলার মাটি শহীদের রক্তে রঞ্জিত হয়। চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর গুলিতে ৭১ জন নিহত হয়। সারা দেশ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
ইশতেহারে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হলো, সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হবেন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান নেতা; গাঢ় সবুজের জমিনের উপর লাল সূর্য এবং লাল সূর্যের উপর বাংলাদেশের সোনালি মানচিত্র সংবলিত জাতীয় পতাকা; জাতীয় সঙ্গীত হবে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’; গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ও সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি; বাংলাদেশেদের মানচিত্র অনুযায়ী ৫৪০০০ বর্গমাইলে এ দেশকে শত্রুমুক্ত করতে হবে; সশস্ত্র বাহিনীর সব বাঙালি সেনাদের, ইপিআর পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীকে জনগণের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে; শ্রমিক-কৃষক, ছাত্র-শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিক, গায়ক-গায়িকা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সমন্বয়ে সংগ্রাম কমিটি করাসহ একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি; এই ইশতেহারের মধ্য দিয়ে কেবল স্বাধীনতা সংগ্রামের কর্মসূচি ঘোষণা হয়নি বরং প্রতিটি বিষয়ে পল্টন ময়দানে উপস্থিত লাখ লাখ জনতা হাত তুলে সমর্থন অনুমোদন দেন।
ঐতিহাসিক স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস উপলক্ষে শনিবার(৩ মার্চ) বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। স্মৃতিচারণ করবেন স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক স্বাধীন বাংলা ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা শাজাহান সিরাজ। প্রধান অতিথি হিসেবে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেবেন ডাকসুর তৎকালীন ভিপি ও প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী আসম আবদুর রব। আলোচনায় অংশ নেবেন গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। সভাপতিত্ব করবেন স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম খান।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno