আজ- ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  রাত ৪:০৬

আজ চৈত্রসংক্রান্তি

 

দৃষ্টি নিউজ:


ঝরা পাতার মতো ঝরে যাচ্ছে আরও একটি বছর। আজ চৈত্রসংক্রান্তি। বাংলা ১৪২৪ সনের শেষ দিন। ঋতুরাজ বসন্তেরও বিদায়। চৈত্রসংক্রান্তি বাংলার বিশেষ লোক উৎসব। প্রধানত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব হলেও চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক বাঙালির কাছে চৈত্রসংক্রান্তি এক বৃহত্তর লোকৎসবে পরিণত হয়েছে।
বাংলা বর্ষপঞ্জির শেষ মাস চৈত্রের নামকরণ হয়েছিল চিত্রা নক্ষত্রের নামে। আবহমানকাল থেকে এই জনপদে বছরের শেষ দিনটি দান, স্নান, ব্রতসহ বিভিন্ন মাঙ্গলিক আচার-অনুষ্ঠানের ভেতর দিয়ে পালনের রীতি চলে আসছে। বছরের বিদায়বেলায় মানুষ সাধারণত অতীতের সব গ্লানি, ব্যর্থতা, রোগ-শোক, বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির প্রত্যাশা করে। মনে আশা থাকে নতুন বছর বয়ে আনবে সুখ, শান্তি, সচ্ছলতা। এর ওপর ভিত্তি করেই কৃষিভিত্তিক এই জনপদে চৈত্রসংক্রান্তির আচার-আয়োজনগুলোর উদ্ভব হয়েছিল। চৈত্রের দহন আরও তীব্র হয় গ্রীষ্মে। সঙ্গে ঝড়ঝাপটার দাপট। এসব থেকে রক্ষা পেতে সূর্যকে স্তবস্তুতি করে তুষ্ট রাখাই ছিল চৈত্রসংক্রান্তির লোকাচারের মূল ভাবনা।
চৈত্রসংক্রান্তির লৌকিক আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রধান হলো গাজন। গাজন শুরু হয় চৈত্রের শেষ দিন থেকে, চলে আষাঢ়ী পূর্ণিমা পর্যন্ত। গাজন হয় সাধারণত শিব ও নীলের। সনাতনী বিশ্বাস ছিল, চৈত্রের শুরু থেকে বর্ষার শুরু পর্যন্ত সূর্যের যে প্রখর উত্তাপ, গাজনের স্তবস্তুতিতে তা প্রশমিত হয়। গাজনে অষ্টক গান ও নৃত্যের রীতি প্রচলিত রয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। এ ছাড়া সংক্রান্তির আরেকটি প্রধান আয়োজন থাকে চড়ক। সংক্রান্তির কয়েক দিন আগে থেকেই চড়কগাছ নিয়ে ভক্তের দল গ্রামে গ্রামে ঘুরে কীর্তন ও শীবের গীত গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করে। এই দলে একজন শিব ও একজন গৌরীর সাজে সজ্জিত থাকেন। পরে সংক্রান্তির দিনে চড়ক ঘোরানোর আয়োজন করা হয়।
এসব লৌকিক, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের বাইরে বছরের শেষ দিনটিতে গ্রামাঞ্চলে ঘরদোর লেপা-পোছা, বিশেষত সকালবেলায় ঘর পরিচ্ছন্ন করা ও গরু-বাছুরের গা ধুইয়ে দেয়ার রীতি প্রচলিত। এ সময়টায় উদরাময়, চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ে। তাই বছরের শেষ দিনে নিরামিষ ও তেতো খাওয়ার চল রয়েছে। এককালে সাত রকমের তেতো শাকের বিভিন্ন পদ রান্না হতো। মেয়ে-জামাইকে নাইওর আনা, নতুন পোশাক-আশাক উপহার দেয়ার রীতিও চালু ছিল গ্রামাঞ্চলে। দিন বদলেছে, এসব রীতি-রেওয়াজ এখন প্রায় উঠেই গেছে। তবে চৈত্রসংক্রান্তির মেলা চালু আছে অনেক অঞ্চলে। এলাকাভেদে সংক্রান্তির মেলা এক দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলে। ঐতিহ্যবাহী কারুপণ্য, খাজা-গজা প্রভৃতির সমারোহ ঘটে গ্রামীণ মেলাগুলোতে। মেলাকে কেন্দ্র করেই এখন মুখর হয়ে ওঠে চৈত্রসংক্রান্তির উৎসব।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno