আজ- ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  সন্ধ্যা ৬:৪১

ঘাটাইলের ছয় ইউপি নির্বাচনে নৌকা-ধানের শীষে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ঘিরে ভোটার, প্রার্থী ও সাধারণ মানুষ উৎসবে মেতে উঠেছেন। প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকরা মতবিনিময়, উঠান বৈঠকসহ নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো নির্বাচনী এলাকা। নিজের বাক্সে ভোট টানতে ভোটারদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। বিজয়ী হলে ব্যাপক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। আগামি ২৯ মার্চ এ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
ঘাটাইলের পাহাড়িয়া এলাকাখ্যাত পুরনো তিনটি ইউনিয়ন ভেঙে সংগ্রামপুর, সন্ধানপুর, রসুলপুর, ধলাপাড়া, লক্ষ্মীন্দর ও সাগরদীঘি নামে ছয়টি ইউনিয়ন গঠন করা হয়। ২০১৬ সালে ঘাটাইল উপজেলার আট ইউনিয়নে নির্বাচন হলেও আইনি জটিলতায় নবগঠিত ও পুনর্গঠিত এই ছয় ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে আইনি বাধা কাটিয়ে আগামি ২৯ মার্চ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
সরেকমিনে দেখা গেছে, নির্বাচনকে ঘিরে দম ফেলার ফুসরত নেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের। ভোটারদের মন জয় করতে তাঁরা নানা কৌশল অবলম্বন করে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। হাট-বাজার, চায়ের দোকান, মাঠ-ঘাটে সর্বত্র ভোট নিয়ে আলোচনা চলছে। ভোটাররা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন করছেন। চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও মূল আলোচনা আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা ও বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থীদের ঘিরেই বেশি হচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হবে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও বসে নেই। সবাই নিজেদের জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিতে আদা-জল খেয়ে মাঠে নেমেছেন।
ছয় ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের চেয়ে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বিএনপি। চেয়ারম্যান পদে একটি ইউনিয়নে বিদ্রোহী ছাড়া অন্য ইউনিয়নে বিএনপির একজন করে প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম লেবুর সঙ্গে এ আসনের (টাঙ্গাইল-৩, ঘাটাইল) সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলছে। টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত এমপি রানা কারাগারে থাকলেও পাহাড়িয়া এলাকায় তাঁর প্রভাব রয়েছে। জেল-হাজতে থাকায় উপজেলায় তাঁর জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। ফলে বিএনপি অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ীর হাসি হাসতে পারেন। এসব নিয়ে ভোটার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা রয়েছে। তবে ভোটাররা প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।
ছয়টি ইউনিয়নের নানা শ্রেণি-পেশার বিভিন্ন বয়সী ভোটার অভিব্যক্তি ব্যক্ত করে বলেন, ইউনিয়নে ইউনিয়নে এখন ভোটের উৎসব শুরু হয়েছে, নির্বাচন জমে উঠেছে। লড়াই হবে আওয়ামী লীগের নৌকা ও বিএনপির ধানের শীষের মধ্যে। তবে এমপি রানার প্রার্থীও খেলা দেখাতে পারে। ভোটারদের কদর এখন খুবই বেশি। সবাই খোঁজখবর নিচ্ছে। কে জিতবে তা বুঝা যাচ্ছে না। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছয় ইউনিয়নের মধ্যে সংগ্রামপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন চারজন প্রার্থী। আওয়ামী লীগ মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহিম, বিএনপি মনোনীত মাহবুবুর রহমান পালন, এমপি রানার অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন বাবু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. ইব্রাহিম।
সন্ধানপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন পাঁচজন। আওয়ামী লীগের মো. মতিয়ার রহমান সরকার, বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম শহীদ, নাগরিক ঐক্যের প্রার্থী মো. রুহুল ইসলাম রিপন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সুলতান মাহমুদ ও মো. শরিফুল ইসলাম সাইদ।
রসুলপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন চারজন। আওয়ামী লীগের শহিদুল ইসলাম, বিএনপির উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. শামছুল আলম, এমপি রানার অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এমদাদুল হক সরকার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম।
লক্ষ্মীন্দর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল আজিজ, বিএনপির উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোফাজ্জল হোসেন, এমপি রানার অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এসকান্দর হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী সুজন চন্দ্র ও মো. একাব্বর আলী।
ধলাপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী য়েছেন পাঁচজন। আওয়ামী লীগ মনোনীত শফিকুল ইসলাম, বিএনপি মনোনীত মো. এজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া মিঠু, এমপি রানার অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রবিউল ইসলাম সেন্টু, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাজিবুল হক ঝন্টু, বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম লেবু।
সাগরদীঘি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হেকমত সিকদার, বিএনপির মামুনুর রশিদ বাদশা ভূঁইয়া, এমপি রানার অনুসারী মো. শাহাদৎ হোসেন সিকদার, অন্য দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম ও মো. হাবিবুল্লাহ বাহার।
ঘাটাইল উপজেলা নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ছয়টি ইউনিয়নে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ২৯২জন। তাঁদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৮ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৯৮ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৬৬ জন। এ ছয়টি ইউনিয়নে ভোটারসংখ্যা এক লাখ ১২ হাজার ৭২৫জন। এরমধ্যে পুরুষ ৫৫ হাজার ৯৩০জন ও মহিলা ৫৬ হাজার ৭৯৫জন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno