আজ- ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  রাত ১২:২২

জমির জন্য শিক্ষক দম্পতিকে খুন, ৯ মাস পর গ্রেপ্তার ৪

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুরে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রানী দাস জমির জন্য খুন হয়েছেন। হত্যাকান্ডের প্রায় নয় মাস পর হত্যারহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
হত্যা মিশনে অংশ নিয়েছিল ছয়জন। তারা প্রথমে অনিল কুমার দাসকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। স্ত্রী কল্পনা রানী ঘটনাটি দেখে ফেলায় তাকেও একইভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে লাশ দুটির গলায় ইটের বস্তা বেঁধে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের খোলা কূপে ফেলে দেয়া হয়। শুক্রবার(১৮ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
হত্যাকান্ডে অংশ নেয়া ছয়জনের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এদের দুজনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এছাড়া একজন জামিনে ছাড়া পেয়ে পলাতক রয়েছেন আর অপরজনের পরিচয় তদন্তের স্বার্থে বলেনি পুলিশ।
এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হওয়ায় নিহতের ছেলে নির্মল কুমার দাস সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৩২), মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. ফরহাদ (৪৮), রসুলপুরের মৃত আমির হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (৩৩) এবং রসুলপুর শালিনাপাড়ার বাহাজ উদ্দিনের ছেলে মনজুরুল ইসলাম মিনজু (৩৩)।
পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, স্কুল শিক্ষক অনিল কুমার দাসের পার্শ্ববর্তী বিক্রমহাটী এলাকায় ৬০ শতাংশ জায়গা রয়েছে। সেই জায়গা আত্মসাৎ করার জন্য তার বৈমাত্রেয় ভাই (সৎভাই) স্বপন কুমার দাস ওরফে স্বপন সৌমিত্র পরিকল্পনা করে। তার সঙ্গে যোগ দেয় রসুলপুর এলাকার কয়েকজন মাদকসেবী। তারা মিলে পরিকল্পনা করে কিভাবে অনিল কুমার দাসের কাছ থেকে জমি লিখে নেয়া যায়। একাজ করতে পারলে স্বপন সৌমিত্র তার সহযোগীদের পাঁচ লাখ টাকা দেবে এবং জমি বিক্রির অর্ধেক টাকাও তাদের দেয়া হবে বলে জানায়।
ঘটনার দিন ছয়জন অনিল কুমার দাসের বাড়ি গিয়ে তিনটি দলিলে স্বাক্ষর দিতে বলে। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা তার স্ত্রী কল্পনা রানী দাস দেখে ফেলায় তাকেও একইভাবে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তাদের লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়া হয়।
পুলিশ সুপার জানান, এ হত্যাকান্ডে জড়িত অভিযোগে গত ১২ মে গ্রেপ্তার হওয়া রসুলপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম ও ফরহাদ টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে হত্যারহস্য বেরিয়ে আসে।
পরে পুলিশ ১৫ মে রসুলপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া ওরফে খোকন ভূঁইয়া ও শালিনাপাড়া গ্রামের মনজুরুল ইসলাম ওরফে মিনজুকে গ্রেপ্তার করে। তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হলে বিচারক রুপম কান্তি দাস তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সুপার জানান, হত্যা মিশনে ছয়জন সরাসরি অংশ নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা পরবর্তীতে জানা যাবে। নিহত অনিল কুমার দাসের বৈমাত্রেয় ভাই স্বপন সৌমিত্র জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে।
মামলার বাদী নিহতের ছেলে নির্মল কুমার দাস বলেন, তদন্ত সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। এভাবে তদন্তের ধারা অব্যাহত থাকলে আমি খুশি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই রাতের কোনো এক সময় অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রানী দাসকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে। পরদিন দুপুরে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে। পরে নিহতের ছেলে বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno