আজ- ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  বিকাল ৪:৪৬

জেনারেল হাসপাতালে টেন্ডার ছাড়াই বাণিজ্যিক ক্যান্টিন নির্মাণ হচ্ছে!

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইল ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের প্রবেশমুখে টেন্ডার ছাড়াই বাণিজ্যিকভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে খাবার বিক্রির ক্যান্টিন! রাষ্ট্রীয় এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ক্যান্টিন নির্মাণের পরিকল্পনা না থাকলেও কেন-কীভাবে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে- এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে। কেন হাসপাতালের নক্সার তোয়াক্কা না করে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা এ ক্যান্টিন নির্মাণ করা হয়েছে- তা নিয়েও নানা প্রশ্ন জেলাবাসীর।
জানা যায়, ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ ২৫.০৩ একর জমির উপর নির্মিত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আব্দুল মান্নান। হাসপাতালের প্রায় পৌনে তিন শতাংশ জমির উপর টেন্ডার ছাড়াই নির্মাণ করা হচ্ছে বাণিজ্যিক ক্যান্টিন। এর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের ৬ আগষ্ট এ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন, জেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন।
সরেজমিনে ও নানা অভিযোগে জানা যায়, ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের সময়ই হাসপাতাল নির্মাণের একটি নক্সা প্রস্তুত করা হয়। তবে প্রস্তুতকৃত ওই নক্সায় কোন ক্যান্টিন ব্যবস্থা ছিলনা। টাঙ্গাইল হাসপাতালকে উন্নীতকরণের লক্ষে ২০১৪ সালে অত্যাধুনিক মানের মেডিকেল কলেজে রূপান্তর করার কাজ শুরু হয়। এ স্বত্তেও হাসপাতালের নক্সা ও পরিকল্পনা অমান্য করে মোটা টাকার সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ক্যান্টিন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট হাসপাতালের প্রায় পৌনে তিন শতাংশ ভূমির উপর টেন্ডার ছাড়া ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ক্যান্টিন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ক্যান্টিনের বরাদ্দ নেয়া হাসপাতালে কর্মরত কোষাধ্যক্ষ মজনু মিয়ার নেতৃত্বে ও গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত ক্যান্টিনটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত জমি দখলের মাধ্যমে ও টেন্ডার বিহীনভাবে কেন বাণিজ্যিক ক্যান্টিন নির্মাণ করা হল- এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ ও পদক্ষেপ দেখতে চান অভিযোগকারীরা।
ক্যান্টিন বরাদ্দ নেয়া হাসাপাতালের কোষাধ্যক্ষ মজনু মিয়া জানান, জেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে ও ১০ লাখ টাকা সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারন করাসহ একটি কমিটি গঠণের মাধ্যমে ক্যান্টিনটি নির্মিত হচ্ছে। এ নির্মাণ কাজের তদারকি করছে গণপূর্ত বিভাগ।
জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ ইবনে সাঈদ টেন্ডার ব্যতিত এ ক্যান্টিন নির্মাণে কথা স্বীকার করে বলেন, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে জনস্বার্থে অস্থায়ীভাবে ওই ক্যান্টিন নির্মাণ করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভুরাম পাল টেন্ডার ব্যতিত ক্যান্টিন নির্মাণ করা কথা স্বীকার করে বলেন, এটি গণপূর্ত বিভাগের কোন কাজ নয়। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে ক্যান্টিনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। গণপূর্ত বিভাগ শুধু এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছে।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল-৫(সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কল্যাণে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে ওই ক্যান্টিনটি নির্মাণ করা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হাসপাতালের ব্যয়ে এ ক্যান্টিনের নির্মাণকাজ পরিচালিত না হওয়ার ফলে এটি কোন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আনা হয়নি। তবে কোটেশনের মাধ্যম আর ক্যান্টিনের লভ্যাংশের একটি অংশ হাসপাতাল মসজিদ, রোগী কল্যাণ তহবিলে জমা দেয়াসহ আরো কয়েকটি শর্তে ক্যান্টিনটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno