আজ- ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  সকাল ৯:৩৪

টাঙ্গাইলে ছোট ভাই হত্যার বিচার চাওয়ায় বড় ভাইকে হত্যার হুমকি!

 

দৃষ্টি নিউজ:

আ. বারেকের মরদেহ

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামে ছোট ভাই হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করায় বড় ভাইকেও হুমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় বড় ভাই আব্দুল আলীম টাঙ্গাইল মডেল থানায় পর পর তিনটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেও হুমকি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।
জানাগেছে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের মো. মোন্নাফ আলীর ছেলে আব্দুল বারেকের(৩২) লাশ গত ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে বাড়ির চৌচালা টিনের ঘরের রক্তাক্ত মেঝে থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ একটি ইউডি মামলা দায়ের করে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। অথচ পরিবারের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুর্বৃত্তরা আব্দুল বারেককে হত্যা করে ঘরে রেখে যায়।
ওই ঘটনায় থানা পুলিশ হত্যা মামলা গ্রহন না করায় আব্দুল বারেকের বড় ভাই আব্দুল আলীম বাদি হয়ে টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর থানা আমলী আদালতে গত ২২ অক্টোবর দন্ড বিধির ৪৫৭/৩০২/৩৪ ধারায় একটি মামলা(নং-৭১৬/২০১৭ইং) দায়ের করেন। মামলায় চৌবাড়িয়া গ্রামের প্রতিবেশি মৃত দানেজ আলীর ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম(৩৫), মো. নুর ইসলাম(২৮), মো. শাহ আলম(২০), মৃত নুর হোসেনের ছেলে মো. রুবেল মিয়া(২৮), মো. সোহরাব মাস্টারের ছেলে মো. এরশাদ মিয়া(৩২), চৌবাড়িয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে মো. মজিদ মিয়া(৫২), বাগবাড়ী গ্রামের মো. আ. হাসেমের ছেলে মো. বাবু(২৬) ও আলোকদিয়া গ্রামের মো. নাজিম উদ্দিনের ছেলে মো. সজিব মিয়াকে(২৮) অভিযুক্ত করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, উল্লেখিত ব্যক্তিদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত মো. মোন্নাফ আলীর ছেলেদের নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। আব্দুল বারেক আকিজ গ্রুপের ফিল্ড অফিসার পদে চাকুরি করতো। গত ২৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে খাবার খেয়ে প্রতিদিনের ন্যায় আব্দুল বারেক নিজ ঘরে ঘুমিয়েছিল। সকালে ঘরের রক্তাক্ত মেঝেতে তার লাশ পাওয়া যায়।

নিজ ঘরের রক্তাক্ত মেঝেতে আ. বারেকের মরদেহ

মামলার বাদি আব্দুল আলীম জানান, মামলায় অভিযুক্তরা স্থানীয় নানা অপরাধের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। প্রধান আসামি মো. জহিরুল ইসলাম প্রায়ই তাদেরকে হত্যা করার হুমকি দিচ্ছিল। তারা আব্দুল বারেককে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর অপচেষ্টা করছে। তিনি দাবি করেন, মৃত আব্দুল বারেকের মোবাইল নম্বরটির কল লিস্ট ধরে তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেড়িয়ে আসবে। অথচ পুলিশ জ্বলজ্যান্ত হত্যার ঘটনাটিকে অপমৃত্যু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা করছে। মামলা দায়ের করায় অভিযুক্তরা মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য তাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে মালার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাজী আ. আওয়ালের পরামর্শে টাঙ্গাইল মডেল থানায় পর পর তিনটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি নং-১২৬২, তাং-১৯/১১/২০১৭ইং, নং-১৩৪৭, তাং-২০/১১/২০১৭ইং এবং নং-১৫৬৩, তাং-২৩/১১/২০১৭ইং) করেছেন। তিনি দাবি করেন, পর পর তিন জিডি দায়ের করলেও পুলিশ ওই জিডির বিষয়েও কোন প্রকার তদন্তই করেনি। অভিযুক্তরা কিছুদিন নীরব থাকলেও বর্তমানে আবারও তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে এবং বলে বেড়াচ্ছে ‘মামলা তুলে না নিলে আ. বারেকের মতো তাকেও পরপারে পাঠিয়ে দিবে’। তিনি ভাই হত্যার ন্যায় বিচার দাবি করেন।
মামলায় অভিযুক্ত মো. জহিরুল ইসলাম, মো. নুর ইসলাম ও মো. শাহ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ‘মামলা-টামলায় কিছু হবে না, সবকিছু ম্যানেজ করা হয়েছে’।
কাতুলী ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বলেন, আব্দুল বারেকের মৃত্যু সম্পর্কে আমার ধারণা নেই। তবে শুনেছিলাম সে আত্মহত্যা করেছে। এ বিষয়ে পুলিশ বিস্তারিত বলতে পারবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মডেল থানার এসআই কাজী আ. আওয়াল জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অপমৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি ইতোমধ্যে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য সময় চেয়েছেন, দ্রুতই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno