আজ- ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সকাল ৯:১৫

টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবসের অনুষ্ঠানে নেই কাদের সিদ্দিকী!

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধ, টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত করণ, ঢাকা অভিমুখে মিত্রবাহিনীর যাত্রা নিষ্কণ্টক রাখা সব কিছুতেই অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। ১৯৭১ সালে টাঙ্গাইলে মাঠের যুদ্ধে টাঙ্গাইল মুক্তিবাহিনী, যা ‘কাদেরিয়া বাহিনী’ নামে সুপরিচিতিÑ এই বাহিনীর যোদ্ধারাই ছিলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছে মুর্তিমান আতঙ্ক। এই বাহিনী একক প্রচেষ্টায় গঠন করেছিলেন সেদিনের যুবক আব্দুল কাদের সিদ্দিকী। পাকিদের কাছে কাদের সিদ্দিকী ‘বাঘা সিদ্দিকী’ নামেও পরিচিত ছিলেন। টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধ আর কাদের সিদ্দিকী সমার্থক। মুক্তিযুদ্ধের কথা বললে সেখানে কাদের সিদ্দিকীর নাম এলোনা- এটা ইতিহাসের বিকৃতি। অসংখ্য গেরিলা আক্রমনের কারণে বিশ্বের অকুতভয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কাদের সিদ্দিকীর অবস্থান নবম। আর সেই কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম নেই টাঙ্গাইল পাক হানাদার মুক্ত দিবসের বর্ণাঢ্য আয়োজনে।
১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর কাদেরিয়া বাহিনীর নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় টাঙ্গাইল শহর। টাঙ্গাইলের মানুষ মুক্তির আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠে। চারদিক প্রকম্পিত হয় জয় বাংলা স্লোগানে। কাদেরিয়া বাহিনী-প্রধান কাদের সিদ্দিকীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে সব কিছু। কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা জামালপুর-টাঙ্গাইল-ঢাকা সড়কের বিভিন্নস্থানে অবস্থান নেন যাতে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর যোদ্ধরা বিনা বাধায় ঢাকার দিকে অগ্রসর হতে পারেন। তার পরের ইতিহাস সবারই জানা। কাদেরীয়া বাহিনীতে ছিলেন প্রায় ১৭ হাজার বীরমুক্তিযোদ্ধা ও ৭২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। এই কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা ৩০০-এর বেশি সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। হত্যা করেন কয়েক হাজার হানাদার।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ১৯৯০ সালে টাঙ্গাইল পাক হানাদারমুক্ত দিবস প্রথম পালন করে সপ্তসুর সাংস্কৃতিক সংগঠন। পরে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে দিবসটি জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হতে থাকে। ২০১২ সালে থেকে টাঙ্গাইল পৌরসভার উদ্যোগে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। এতোদিন শহীদ মিনারে সীমিত আকারে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও গত বছর থেকে ব্যতিক্রম ঘটেছে। গত বছর ৬ দিন ব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করা হয়েছে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে। এ বছরও শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে ৬ দিনব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ছে। এ অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী-এমপি, মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সঙ্গীতশিল্পীসহ বরেণ্য ব্যক্তিদের নাম আমন্ত্রণপত্রে রয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে নাম নেই কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমের! গত বছরও আমন্ত্রণপত্রে নাম ছিল না কাদের সিদ্দিকীর। এ বিষয়টাকে রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব হিসেবে দেখছেন সমাজ সংস্কারকরা।
সোমবার(১১ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইল পাক হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপনে কাদের সিদ্দিকীকে আসতে দেখা যায়নি। কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমকে ছাড়াই শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে ৬দিনব্যাপী টাঙ্গাইল হানাদার মুক্তদিবস এবং বিজয় দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে। পরে সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি সাক্ষাতে কথা বলতে চেয়েছেন।
এ বিষয়ে বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ওনার একান্ত সচিব ফরিদ আহম্মেদ জানান, ডিসেম্বর মাসে বঙ্গবীর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন কথা বলবেন না।
এদিকে কাদের সিদ্দিকীকে ছাড়াই টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবস পালন করায় কাদের সিদ্দিকীর ভক্ত-সমর্থক এবং তার নেতৃত্বে গঠিত দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno