আজ- ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  দুপুর ১:৩১

ধর্ষণের অভিযোগে আদালতের পেশকার রবিউলের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

 

দৃষ্টি নিউজ:

অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার রবিউল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে মঙ্গলবার(২৭ মার্চ) সকালে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বামী পরিত্যক্তা শারমিন বেগম (২৮)। তিনি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া ইউনিয়নের রাথুরা গ্রামের পংকু মিয়ার একমাত্র মেয়ে।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শারমিন বেগম জানান, তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী। বিগত ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট তিনি স্বামী পরিত্যক্ত হন। স্বামী পরিত্যক্তা হওয়ার সুযোগে মুঠোফোনে শারমিন বেগমকে নানাভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখায় ওই গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে ও বান্দরবন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার রবিউল ইসলাম(৩২)। এরই ধারাবিকতায় চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে শারমিনের বাথরুমে যাওয়ার সুযোগে রবিউল ও তার সহযোগী আমিনুর রহমান ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা ঘরের আলমারী ভেঙ্গে প্রবাসী বাবার গচ্ছিত নগদ দশ লাখ টাকা ও প্রায় পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার লুট করেন। তালা ভাঙার শব্দ হচ্ছে দেখে ঘরে ঢুকতেই রবিউল শারমিনের মুখ চেপে ধরেন ও আমিনুর মুখে কস্টটেপ লাগিয়ে অপহরণ করে তাদের যাতায়াতে ব্যবহৃত সিএনজি চালিত অটো রিকশায় তুলে অচেনা স্থানে নিয়ে যান। ৩-৪দিন ওই স্থানে রাখার পর আমিনুর পুনরায় শারমিনকে রবিউলের বাড়িতে নিয়ে এসে আটকে রাখেন। রবিউল বাড়িতে আটক রাখা অবস্থায় একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেন। রবিউলের বাড়িতে আটক রাখার বিষয়টি অবগত হয়ে শারমিনের মা থানায় সংবাদ দেয়। তবে থানা পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি বাদি হয়ে গত ৫ মার্চ টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ‘খ’ অঞ্চলে ১০০ ধারায় মামলা করেন।

শারমিন, তার মেয়ে ও প্রেমিক পেশকার রবিউল- সুখের দিনে তোলা ছবি।

ওই মামলা প্রত্যাহার ও শারমিনকে বিয়ে করবে এমন শর্তে বিষয়টি মিমাংসার লক্ষে সালিশের আয়োজন করে পাকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ। সালিশে রবিউল ইসলাম টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করার কথা স্বীকার করে শারমিনকে বিয়ে করতে রাজি হন। ফলে সালিশের বিচারকরা শারমিনকে রবিউলদের বাড়িতে রেখে আসেন। তবে সালিশের শর্ত উপেক্ষা করে গত ৭ মার্চ রবিউলের মা বাদি হয়ে শারমিনের বিরুদ্ধে নাগরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ শারমিনকে গ্রেপ্তার করে জেল-হাজতে পাঠায়। আদালত থেকে জামিন পেয়ে শারমিন গত ১৩ মার্চ টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে চলমান রয়েছে।
এ নিয়ে অপহরণ ও ধর্ষণে অভিযুক্ত রবিউল ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোন ০১৭১৫-৭৫৪১৭৫ নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে নারী অপহরণ ও ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করে অবসরপ্রাপ্ত আনসার সদস্য ও রবিউল ইসলামের বাবা ইমতিয়াজ আলী জানান, প্রতিবেশি দুই সন্তানের জননী শারমিন বিয়ের দাবিতে তাদের বাড়িতে ওঠেন। তার ছেলে রবিউল ইসলাম অবিবাহিত ও বান্দরবন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার হিসেবে কর্মরত। তিনি প্রশ্ন রাখেন, একজন অবিবাহিত ছেলেকে স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীর সাথে কেন বিয়ে দেব? বিষয়টি সম্ভব নয় বলেই শারমিনকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে সালিশের বিচারক ও ১১নং পাকুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান জানান, রবিউল ও শারমিনের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ কারণে বিয়ে না করে প্রায়ই শারমিন তার প্রেমিক রবিউলদের বাড়িতে অবস্থান করত। রবিউল বিয়ে ছাড়া কেন শারমিনকে বাসায় রাখেন বিষয়টি স্পষ্ট করতে ওই সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশি বৈঠকে সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করায় শারমিনকে বিয়ে করার শর্ত দিয়ে রবিউলদের বাড়িতে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে রবিউলের পরিবার ওই শর্ত অমান্য করে শারমিনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠান বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno