আজ- ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  সন্ধ্যা ৬:৪৬

ধূলায় ধূসর জনজীবন ॥ বাড়ছে বায়ুবাহিত রোগ

 

দৃষ্টি নিউজ:


বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে টাঙ্গাইলের উপ-শহর এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইটের সলিং থাকার পুরো এলাকা ধূলায় ধূসর। ফলে মহাসড়কে যাতায়াতকারী ও স্থানীয়রা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বাড়ছে বায়ুবাহিত রোগ। মহাসড়কে ইটের সলিং ধূলা সৃষ্টির প্রধান কারণ বলে দীর্ঘদিন যাবত এ অবস্থার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের গাফিলতিকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।
উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহ সহ দেশের ২৩ জেলার যানবাহন চলাচল করে থাকে ওই মহাসড়ক দিয়ে। যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া বাসস্ট্যান্ডের অদূরে এলেঙ্গা সরকারি শামসুল হক কলেজ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এলেঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বালক উচ্চ বিদ্যালয়, হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, বৃহত্তর বাজার, ব্যাংক ও বীমা অফিস, বেসরকারি হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড দিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন।
এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, ধূলার কারণে মহাসড়কের পশ্চিম পাশ থেকে পূর্ব পাশের মানুষ দেখা যায় না। বাসস্ট্যান্ডের দু’পাশের দোকানগুলো ধূলায় ধূসর রঙ ধারণ করেছে। বাসের জন্য অপেক্ষমান দাঁড়ানো যাত্রীরা মুখে কাপড় দিয়ে ধূলা থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের হোটেল ও দোকানগুলোর খাবারের উপর ধূলার আস্তরণ পড়েছে।
টাঙ্গাইলের করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজে অনার্স পড়ুয়া লোকমান হোসেন নামে এক ছাত্র বলেন, আমাকে কলেজে যাওয়ার জন্য এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠতে হয়। বাসস্ট্যান্ডে পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলে পড়নের পোশাকে আর কলেজে যাওয়ার পরিবেশ থাকেনা। ধূলায় সারা শরীর নষ্ট হয়ে যায়। এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে যাতায়াতকারী চাকরিজীবীরাও একই ধরণের মন্তব্য করে বলেন, যে কাপড় পড়ে বের হই, সেটা পড়ে অফিস করতে লজ্জা করে। ধূলায় পোশাক নষ্ট হওয়ায় এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীরা আত্মীয়-স্বজনের বাসা-বাড়িতে যেতে বিব্রতবোধ করেন। বাসস্ট্যান্ডের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ধূলার কারণে আমাদের দোকানে ক্রেতা কম আসে এবং কেনাবেচা কম হয়। এদিকে ধূলা মাড়িয়ে যাতায়াতকারী এ এলাকার শিশু-বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রকম বায়ু বাহিত রোগ।
এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর এসএম শহীদুর রহমান বলেন, অসহনীয় ধূলার কারণে আমাদের ডিউটি করা খুব কষ্টকর ও ভয়াবহ হয়ে পড়েছে। পুলিশ সদস্য ও সাধারণ মানুষ শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অতিদ্রুত এ অবস্থার সমাধান প্রয়োজন।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সুজাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ধূলা মানব দেহে নিয়মিত প্রবেশ করতে থাকলে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে ইনফেকশন এবং অ্যাজমা হবে। নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হবে, ঘ্রাণশক্তি কমে যাবে। এতে শিশু ও বৃদ্ধদের মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
এবিষয়ে এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর এ আলম সিদ্দিকী বলেন, ধূলার কারণে এলাকার জন-জীবন বিপর্যস্ত। বিষয়টি আমি অনেকবার উপজেলা ও জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় বলেছি। ৯ মাসেও কোন কাজ হয়নি। অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে ইটের সলিং- এটা খুবই হাস্যকর এবং বেমানান। সড়কের বাকি অংশ পাকাকরণ করে জনগণকে ধূলার জ্বালা থেকে দ্রুত মুক্তি দেয়া উচিত।
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের(সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী আমিমুল এহসান বলেন, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের ৩০০ মিটার সড়কে ইটের সলিং রয়েছে। এটুকু সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কর্পোরেশন(সাসেক-২) কর্তৃপক্ষের পাকাকরণের কথা থাকলেও তারা কাজ করেনি। ইটের সলিং এবং যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে এই ধূলার সৃষ্টি হয়। জনদুর্ভোগের কথা শিকার করে তিনি আরো বলেন, এই টুকু সড়ক অতি দ্রুত পাকাকরণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno