আজ- ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  বিকাল ৩:৪৯

নদী ভাঙনে বঙ্গবন্ধুসেতু রক্ষা গাইড ও শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে

 

দৃষ্টি নিউজ:


নদী ভাঙনের ফলে বঙ্গবন্ধুসেতু রক্ষা গাইড বাঁধ ও টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধ দুটি ভেঙে যে কোন সময় বিত্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যাতায়াত সহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে পারে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়ের ৮ নং ওয়ার্ডের রানা গাছা এলাকায় ঝিনাই নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে শহর রক্ষা বাঁধ। গত দুইদিনের ভাঙনে কবরস্থান ও বেশ কয়েকটি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেকোন সময় রক্ষা বাঁধ ভেঙে শহরে পানি প্রবেশ করতে পারে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুকনো মৌসুমে বাংলা ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করায় বন্যার সময় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। বাংলা ড্রেজারের বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনে একাধিকবার অভিযোগ করলেও তারা বিষয়টি কোন আমলে নেননি। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রানাগাছা এলাকাবাসীর।
এদিকে, বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষা গাইড বাঁধ এলাকায় আবারো ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার মধ্যরাত থেকে সেতুর পূর্ব পাড় গরিলাবাড়ী অংশে এ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে বৃহস্পতিবার(১২ জুলাই) সকাল ১১টা পর্যন্ত একশ’ মিটার অংশ ধসে ও ১০ টি বসত বাড়ি যমুনার পেটে চলে গেছে। গত বছরের ভাঙনের ফলে দ্বিতীয় সেতু রক্ষা বাঁধটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় এখন ঝুঁকির মুখে পড়েছে প্রথম সেতু রক্ষা বাঁধ। ভাঙন অব্যাহত থাকায় দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বঙ্গবন্ধু সেতু হুমকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে বিবিএ’র পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা কোন কাজেই আসছে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে।
এছাড়া, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের রানাগাছা এলাকার রাস্তাটি (শহর রক্ষা বাঁধ) আংশিক ভেঙে গিয়ে হুমকির মুখে রয়েছে। ইতোমধ্যেই তুলা মিয়ার ৪০ শতাংশ, আজাহার আলীর ৪০শতাংশ, বাদশা মিয়ার ৪০ শতাংশ, সাহাদত আলীর ৩০ শতাংশ, খালেক মিয়ার ৪০শতাংশ সহ এলাকার বেশ কয়েকজনের জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে শত শত বসতভিটা ও ফসলী জমি।
রানাগাছা এলাকার তুলা মিয়া জানান, গত দুইদিনে ভাঙনে শহর রক্ষা বাঁধটি অর্ধেকের বেশী নদী গর্ভে চলে গেছে। বাঁধের বাকি অংশেও ফাঁটল দেখা দিয়েছে। এই নদী ভাঙন রোধে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সাহাদত আলী জানান, শুকনো মৌসুমে নদী থেকে বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমেই তাদের ফসলি জমিসহ বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বাংলা ড্রেজারের বিষয়টি প্রশাসনকে একাধিকবার জানালেও তারা প্রয়োজনীয় কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
অপরদিকে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলী, রাঙ্গাচিড়া, খাসকুকুয়া এলাকায় যমুনার ভাঙনে অন্তত ৩০টি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের ভাঙনে দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ ও ঐহিত্যবাহী চরপৌলী হাট যমুনার পেটে চলে গেছে। শত শত একর ফসলি জমি ও বসতভিটা হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী একটি বাঁধ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
চরপৌলী এলাকার জেবুন্নেছা জানান, গত তিন বছর ধরে বাড়ি সরিয়ে অন্যন্যের জমিতে ঘর উত্তোলন করে থাকছেন তিনি। এবারেও যমুনার ভাঙন তার ঘরের পেছনে এসেছে। এখন তার আর যাওয়ার কোন জায়গা নেই। তাই তিনি সরকারের কাছে কোন সাহায্য বা সহযোগিতা চান না। তিনি চান রাক্ষুসী যমুনার ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ীভাবে একটি বাঁধ নির্মাণ করে তাদের শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করা হোক।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, ইতোমধ্যেই ভাঙন কবলিত এলাকাসহ শহর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno