আজ- ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার  সকাল ১০:০৬

প্রস্তাবিত ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’ :: আগামী বছর টেন্ডার

 

দৃষ্টি নিউজ:


বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে নির্মিত হবে দেশের বৃহত্তম রেল সেতু। ডুয়েলগেজ রেলওয়ে স্টিল সেতুর ডিটেইলড ডিজাইনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের মধ্যে। অপরদিকে ২০২২ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ও রামু হয়ে মিয়ানমারের ঘুনধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’ নামক প্রস্তাবিত বৃহত্তম সেতুটি নির্মিত হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিম-পূর্বসহ পুরো রেলওয়ের নেটওয়ার্ক বিস্তার লাভ করবে। এর ফলে বাংলাদেশ ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পথে আর কোনো বাধা থাকবে না। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে হলে এশিয়ার যে কোনো দেশে কম খরচে আরামদায়ক ভ্রমণ করা যাবে। এক টিকিটে অনেক দেশ ঘুরে বেড়ানো সম্ভব হবে। ফলে বাংলাদেশের পর্যটন স্থানগুলোর আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি পাবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর ‘যমুনা বহুমুখী সেতু’র নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুনে যান ও ট্রেন চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা হয়। পরে এ সেতুর নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু সেতু। কিন্তু শুরু থেকেই এ সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়। ব্রিজের সঙ্গে যুক্ত ট্রেনের আউটার সিগন্যালিং খাঁচা দুষ্কৃতকারীরা অনেক আগেই ভেঙে ফেলায় ট্রেন চলছে কচ্ছপ গতিতে। এছাড়া ঝুঁকির কারণে এ সেতু দিয়ে কনটেইনারবাহী ট্রেন চালানোও সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েক দফায় বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনাও ঘটে। এসব কিছু বিবেচনায় ২০১৪ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফরের সময় প্রকল্পটিতে অর্থায়নের বিষয়ে আলোচনা করেন। পরে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ইআরডি ও জাইকা প্রকল্পটির ওপর মিউনিটস অব ডিসকাশন (এমওডি) স্বাক্ষর করেছে। এ প্রকল্পটির আওতায় ভারি পণ্য পরিবহনেরও মহাপরিকল্পনা রয়েছে- যার মধ্যে থাকবে দুটি কনটেইনার, একটি পেট্রোলিয়াম ও দুটি খনিজ সম্পাদবাহী ট্রেন।
বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুল আহসান জানান, এ সেতু নির্মাণ শেষ হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রেলপথে ভারি পণ্য সামগ্রীও বহন করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে চালু সহজতর হয়ে উঠবে। জাপানের অর্থায়নে এ সেতু হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতু। ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সংযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। বাকি ২ হাজার ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। সেতুটির উপরিভাগ নির্মাণ করা হবে স্টিল দিয়ে। এছাড়া মূল সেতুর বাইরে শূন্য দশমিক ৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব ও পশ্চিম রেলস্টেশন ভবন এবং স্টেশন চত্বর মেরামত ও রিমডেলিং এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকায়নসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম করা হবে।
জাপানের ওরিয়েন্টাল গ্লোবাল, চদাই কনসালট্যান্টস লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন ও এসিই কনসালট্যান্ট নামের দুটি কোম্পানিও কাজ করছে জানিয়ে মো. কামরুল আহসান জানান, কোম্পানি তিনটি সূক্ষ্মতার সঙ্গে কাজ করছে। কয়েক মাসের মধ্যে তারা ডিজাইনটি মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে। ২০১৯ সালের আগেই টেন্ডার করা হবে। তিনি বলেন, এ সেতুটি নির্মাণ শেষ হলে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কনটেইনার পরিচালনার জন্য ব্রডগেজ কনটেইনার ট্রেন সার্ভিস চালু করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে লোড ও স্পিড প্রতিবন্ধকতা দূর হবে। এ সেতুটি নির্মাণ শেষে ট্রেন চালুর পর থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতুতে থাকা রেলপথটি বন্ধ করে দেয়া হবে। এছাড়া প্রস্তাবিত সেতু থেকে বগুড়া পর্যন্ত আলাদা রেললাইন নির্মাণের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno