আজ- ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার  রাত ৪:৫২

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফাহিমের হাত ভাঙার ঘটনায় ক্যাম্পাস থমথমে!

 

দৃষ্টি নিউজ:


মাওলানা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র ফাহিমের হাত ভেঙে দিয়েছে বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েম শিকদার ও তার সহযোগিরা। একই অপরাধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো দুই ছাত্র শুভ ও রানাকেও মারপিট করেন তারা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে। শনিবার(৯ মার্চ) দুপুরে ওই বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. খাইরুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মো. সিরাজুল ইসলামের কাছে অভিযোগ করেন তারা। অভিযোগ গ্রহণকালে প্রক্টর বিকালেই এর সিদ্ধান্ত দেয়ার আশ্বাসের সময় শেষেও কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষুব্ধ ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিদিনই ২য় বর্ষ ১ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা র‌্যাগিংয়ের নামে ডেকে নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। এরপরও প্রায় দেড় মাস যাবৎ ওই সিনিয়রদের সম্মান দেখিয়ে চুপচাপ থাকেন। তবে তারা মনে করেন, ওই চুপ থাকাকে দুর্বলতা আর ভীত ভেবে আজ তাদের সহপাঠি ফাহিম, শুভ ও রানাকে শিবির আখ্যা দিয়ে এমন নির্দয় নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ কারণে তারা এর প্রতিবাদে নেমেছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে তারা জানান, শুক্রবার(৮ মার্চ) রাতে মুঠোফোনে দুইবার ফাহিম, শুভ ও রানাকে ডেকে নেয় সায়েম। ডেকে নেয়ার পরই তাদের মারধর করে সায়েমসহ তাদের বিভাগের ২য় বর্ষ ১ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী কামাল, অনিন্দ, জিল্লুর, আতিক ও রাশেদ।
এছাড়াও ১ম বর্ষের ওই ছাত্র নির্যাতনে প্রতিবাদ করাসহ অভিযোগ দেয়ায় উপস্থিত ছাত্রদের নিশ্চিত করতে সায়েম এর পক্ষের ছেলেরা ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ছবি তুলতে থাকে। এ নিয়েও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তবে এ ঘটনায় জড়িত সায়েম ছাত্রলীগের নেতা হওয়ায় দলবল নিয়ে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সায়েমের পক্ষে তদবির করে।
এ সময় তারা আরো বলেন, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রকে পিটিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দমন-পীড়নের জন্য এমন বর্বরতা চালানোর নেতৃত্বদাতার ভূমিকায় রয়েছেন বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েম শিকদার। এমন অপতৎপরতা চালানোর পাশাপাশি সায়েম শিকদার নিজেকে ক্যাম্পাসের কিং হিসেবে উপস্থাপন করে নতুন শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তারা।
এছাড়াও সায়েম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিকাশ একাউন্ট খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ তুলে জানান, ওই একাউন্ট এর মাধ্যমে জোড়পূর্বক টাকা লেনদেন করেন। তবে লেনদেন করা ওই টাকার ক্ষেত্রে একাউন্ট প্রতি ২ হাজার টাকা লেনদেনে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা আদায় করে আসছে।
তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েম শিকদার জানান, তার রাজনৈতিক ভাবমুর্তি নষ্ট করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও কর্তৃপক্ষের একটি মহল এ অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। তবে এ নির্যাতনের শিকার দাবিদার রানা চাঁদপুর জেলা শাখা ছাত্র শিবির এর রাজনীতিতে জড়িত থাকার অসংখ্য প্রমাণ তার সংগ্রহে আছে বলেও জানান তিনি।
এ ছাত্র নির্যাতন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, ‘ফাহিম শিবিরের সাথে যুক্ত, তার তথ্য প্রমাণও তার কাছে রয়েছে। এজন্য সায়েম তাকে পিটিয়েছে। সাংগঠনিকভাবে আমাকে সেখানে যেতে হয়। তবে বাকি দুই ছাত্রকে কেউ পিটিয়ে থাকলে দোষীদের অবশ্যই বিচার হবে।’
এ প্রসঙ্গে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সায়েম শিকদারের বিরুদ্ধে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও ২য় ও ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টারের ৫ শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের মুছলেকা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno