প্রথম পাতা / জাতীয় /
ভূঞাপুরে দেড়শ’ এসিটি শিক্ষকের ভাগ্য অনিশ্চিত!
By দৃষ্টি টিভি on ২৩ জানুয়ারী, ২০১৮ ৬:৪৩ অপরাহ্ন / no comments
দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৪৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট(সেকায়েপ) এর আওতাভুক্ত ১৫০ অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষকের(এসিটি) ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা চরম হতাশায় ভুগছেন।
জানা যায়, ভূঞাপুর উপজেলার দূর্গম চরাঞ্চলের ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি ভীতি দূর ও মাধ্যমিক শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়ন এবং শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়া রোধে মাধ্যমিক স্তরে ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে ‘সেকায়েপ’ প্রকল্পের আওতায় তিন দফায় ১৫০জন অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক(এসিটি) নিয়োগ দেয়া হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এসব এসিটি শিক্ষকরা চরম হতাশায় ভুগছেন। মৌখিকভাবে এসব শিক্ষকদের বিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা বলা হলেও সরকারিভাবে কাগজ-কলমে এখন পর্যন্তও কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। অধিকাংশ শিক্ষকের সরকারি চাকরির বয়সসীমা পাড় হয়ে যাওয়ায় যেমন শিক্ষকদের মাঝে প্রভাব পড়ছে, তেমনি বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের মাঝেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের মানসম্মত এসব শিক্ষক চলে গেলে শিক্ষার্থীদের পাঠ কার্যক্রম অনেকটা ব্যাহত হবে।
ধুবলিয়া মোবারক মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী কামরুন্নাহার কনিকা, রহিমা, লাবনি, মেরাজ, শাকিলসহ আরো অনেকেই জানায়, এসিটি শিক্ষকরা প্রতিমাসে ১৬-২০টি অতিরিক্ত ক্লাস নেন। যা তাদের প্রাইভেট ও কোচিং থেকে দূরে রাখছে। এসব অতিরিক্ত ক্লাসে গরিব ও দূর্বল শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উপকৃত হচ্ছে। শিক্ষার গুনগত মান বজায় রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব শিক্ষকদের খুবই প্রয়োজন।
এসিটি শিক্ষকদের বিষয়ে কুলসুম জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছানোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে এমনিতেই শিক্ষক সংকট। এর মধ্যে যদি এসিটি শিক্ষকদের চাকরি না থাকে তাহলে বিদ্যালয়ের পাঠদান হুমকির মুখে পড়বে।
ধুবলিয়া মোবারক মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে এসিটি শিক্ষকদের অবদান ব্যাপক। বিশেষ করে বিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে যে ভীতি কাজ করে তা অনেকাংশে দূর হবে। গত তিন বছরে এর ব্যাপক সুফল পাওয়া গেছে। এ জন্য এসব চাকরি স্থায়ীকরণ করা উচিত।
যমুনা নদী তীরবর্তী মমতাজ ফকির উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবলু মিঞা বলেন, এ এলাকাটি নদী ভাঙন কবলিত হওয়ায় দরিদ্র শ্রেণির লোকজন বেশি এবং প্রচুর শিক্ষর্থী ঝড়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের মাঝে মানসম্মত শিক্ষার আগ্রহ কম ছিল। কিন্তু এসিটি শিক্ষকদের বদৌলতে শিক্ষার্থীদের গুনগত মানসম্মত শিক্ষার আগ্রহ যেমন বেড়েছে তেমনি কমেছে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার সংখ্যা। এ ধারা বজায় রাখতে এসিটি শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের কোন বিকল্প নেই।
তালুকদার সিরাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে এমনিতেই বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের অভাব রয়েছে। তার মধ্যে যদি এসব মেধাবী ও অভিজ্ঞ এসিটি শিক্ষকদের চাকরি না থাকে তাহলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গুনগত মানসম্পন্ন পাঠদান ব্যাহত হবে।
ধুবলিয়া মোবারক মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসিটি শিক্ষক রুহুল আমীন জানান, তিনি মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়ো টেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি ও এমএসসি ডিগ্রি সম্পন্ন করে সেকায়েপ প্রকল্পের আওতায় এসিটি শিক্ষক (বিজ্ঞান) বিষয়ে কর্মরত। গুনগত মানসম্মত শিক্ষাদানে তারা বদ্ধ পরিকর। গত বছরের ডিসেম্বরে এর মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা চরম অনিশ্চয়তায় দিনাতিপাত করছেন। তারা বিদ্যালয়ে পূর্বের মতোই ক্লাস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপর এসিটি শিক্ষক মেহেনাজ জান্নাত মিনি বলেন, প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি ও এমএসসি ডিগ্রি সম্পন্ন এবং ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড ও এমএড ডিগ্রি সম্পন্ন করে সেকায়েপ প্রকল্পের আওতায় এসিটি শিক্ষক যোগদান করি। বিদ্যালয়ের সাথে এমনভাবে জড়িয়ে গেছি সেখান থেকে চলে যেতে হবে ভাবতেই চোঁখে পানি এসে যায়। এর মধ্যে আবার সরকারি চাকরির বয়সও শেষ। এতে চরম হতাশায় দিনযাপন করছি।
পলশিয়া রানী দ্বীনমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসিটি শিক্ষক (গণিত) কাজী হেলাল বলেন, সরকারি চাকরির বয়সসীমা পাড় হয়ে গেছে। আশা ছিল শিক্ষকতা করেই সারাটা জীবন পাড় করব। কিন্তু শিক্ষকতা ছাড়তে হবে ভাবতেই কষ্ট লাগছে।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাহিনুর ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে এসিটি শিক্ষকদের অবদান ব্যাপক। বিশেষ করে বিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে যে ভীতি কাজ করে তা অনেকাংশে দূর হয়। গত তিন বছরে এর ব্যাপক সুফল পাওয়া গেছে।
এসিটি’র ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর উম্মে হাবিবা খানম বলেন, এসিটি শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেলেই তাদের জানিয়ে দেয়া হবে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
সর্বশেষ আপডেট
-
ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা
-
এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নয় :: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
-
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ জিআই পণ্যের সনদ বিতরণ
-
যুদ্ধকে ‘না’ বলুন :: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
-
টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ মাঠে ইস্তিকার নামাজ আদায়
-
টাঙ্গাইলে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপিত
-
টাঙ্গাইলে পঁচা মাংস বিক্রি করায় ব্যবসায়ীকে জরিমানা
-
বখাটেদের টাকা না দেওয়ায় প্রবাসীকে নিয়ে তুলকালাম!
-
শিক্ষাবিদ আব্দুল মোমেনের দাফন সম্পন্ন