আজ- ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  বিকাল ৫:৪৪

ভ্যাকসিন না দেয়ায় সাপের কামড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু নিয়ে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ!

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্টার ডা. মনিরা আফরোজের বিরুদ্ধে সাপে কাটা রোগীকে ভ্যাকসিন না দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। ভ্যাকসিন না দেয়ায় সাপের কামড়ে আহত বৃদ্ধ আবু সাইদ নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পরিবারের সদস্যরা। মৃত আবু সাইদ(৬০) কালিহাতী উপজেলার চর ভাবলা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। শনিবার(২১ জুলাই) সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ছেলে শহিদুল ইসলাম শান্ত লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৬ জুলাই(সোমবার) দুপুরে বাড়ির পাশে দোকানে বসে থাকা অবস্থায় তার বাবাকে সাপে কামড়ায়। দুপুর ২.২৫ মিনিটে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মনিরা আফরোজের অধীনে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির সময় তার বাবার পায়ের দুটি পায়ের বাঁধন খুলে দেয়া হয় এবং বলা হয় হাসপাতালে সাপে কাটার ভ্যাকসিন নেই।
শহিদুল ইসলাম শান্ত কালিহাতী উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. শরিফ হোসেন খানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সাপে কাটার ভ্যাকসিন না থাকার বিষয়টি জানালে তিনি হাসপাতালে ভ্যাকসিন আছে বলে তাকে নিশ্চিত করেন। সাপে কাটার ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য সিভিল সার্জন নিজে কর্তব্যরত ডাক্তারের সাথে কথা বলেন এবং হাসপাতালের সহকারী পরিচালককেও বিষয়টি জানান।

মৃত আবু সাইদ

সিভিল সার্জন ডা. শরীফ হোসেন খান ফোনে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ডা. মনিরা আফরোজ। সিএস বললেই দিতে হবে, আপনি হাসপাতাল ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলেন বলেও সাফ জানিয়ে দেন কর্তব্যরত ডা. মনিরা আফরোজ। তখন তিনি হাসপাতালের সহকরী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সদর উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। এসময় তিনি শহিদুল ইসলাম শান্তকে আশ্বস্ত করে জানান, আরএমও’র সাথে কথা বলছি ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
পরে তিনি ডা. মনিরা আফরোজের সাথে দেখা করলে তিনি বলেন, আরএমও’র সাথে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু আমি এন্টি ¯েœক ভেনম ভ্যাকসিন দিতে পারবো না। পরবর্তীতে বিকাল ৫টার দিকে চিকিৎসক আমার বাবাকে ঢাকা অথবা ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। অবস্থার অবনতি হলে আমরা তাকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে নিয়ে যাই। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সন্ধ্যা ৭.৪৫ মিনিটে ভর্তি করানো হয়। পরে ৮.১৫ মিনিটে তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
পরিবারের সদস্যরা কান্না বিজড়তি কণ্ঠে বলেন, যার কারণে আমরা আমাদের অভিভাবক হারালাম তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে ভবিষ্যতে ডাক্তারের অবহেলার কারণে আর কোন মানুষের মৃত্যু না হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. মনিরা আফরোজ বলেন, সিভিল সার্জন আমাকে ভ্যাকসিন দেয়ার নির্দেশ দিলেও সেটিংসের কারণে আমি দিতে পারিনি। পরে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে রোগিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. শরীফ হোসেন খান বলেন, আমি ওই ডাক্তারকে ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য মোবাইল ফোনে বলেছিলাম। ভ্যাকসিন না দেওয়ার কারণে রোগীর মৃত্যু অত্যন্ত দু:খজনক। অবশ্যই ডা. মনিরা আফরোজের এ বিষয়ে অবহেলা রয়েছে। কারণ তিনি প্রথমে স্বীকার করেন নাই ভ্যাকসিন আছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত আবু সাইদের স্ত্রী শরিফা বেগম, বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম শান্ত, ছোট ছেলে সোহেল রানা, মেয়ে শান্তা ইসলাম, টাঙ্গাইল স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno