আজ- ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  বিকাল ৫:২৭

মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতীমায় তুলির আঁচর

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় আঁচার শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপে প্রতীমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কারিগররা। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতীমা নির্মাণের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে সুদৃশ্য ফটক ও প্যান্ডেল নির্মাণ।

জানা যায়, শ্রাবন মাসের জগন্নাথ দেবের উৎসবের দিন থেকেই প্রতিমা বানানোর কাজে হাত দেন কারিগররা। মনসা পুজার পর থেকে মূল প্রতিমায় মাটির প্রলেপের কাজ করেন শিল্পীরা। দেবীর প্রতিমা নির্মাণে মাটির প্রলেপের সর্বশেষ কাজ বা দো’মাটি করা শেষ হয়েছে। এখন শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়া ও রঙ-তুলির আঁচরে ফুটিয়ে তুলবেন প্রতিমার দৃষ্টিনন্দিত রূপ।

শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে জেলা-উপজেলার হিন্দুপাড়া গুলোতে উৎসবের আগাম আমেজ লক্ষণীয়। জাত-পাত-উচু-নিচুর বিভেদ ভুলে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্র করে মহাসম্মেলন হয় বলে এ পূজাকে সার্বজনীন বলা হয়। আর শরৎকালে অনুষ্ঠিত হয় বলেই এটি শারদীয় উৎসব। সরেজমিনে মণ্ডপে মণ্ডপে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেঁচা, হাঁস, সর্পসহ প্রায় ১২টি প্রতীমা শোভা পেতে দেখাগেছে। দুর্গাদেবীকে বরণ করে নিতে মণ্ডপে প্রতীমা তৈরির পাশাপাশি সাজসজ্জার কাজ চলছে। ঢাক, ঢোল সহ অন্য বাদ্যকররা বাদ্যযন্ত্র ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন।

টাঙ্গাইল জেলায় এ বছর ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় এক হাজার ২১৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২০৯টি, ধনবাড়ী উপজেলায় ২৯ টি, মধুপুর উপজেলায় ৫২টি, ভূঞাপুর উপজেলায় ৩৮টি, গোপালপুর উপজেলায় ৫১টি, ঘাটাইল উপজেলায় ৭৮টি, কালিহাতী উপজেলায় ১৮০টি, দেলদুয়ার উপজেলায় ১২৪টি, নাগরপুর উপজেলায় ১২৫টি, মির্জাপুর উপজেলায় ২৩৩টি, বাসাইল উপজেলায় ৫১টি ও সখীপুর উপজেলায় ৪৪টি পূজা মণ্ডপ রয়েছে।

টাঙ্গাইলের উল্লেখযোগ্য মণ্ডপগুলো হচ্ছে- শহরের বড় কালীবাড়ী, আদালতপাড়া, সদর উপজেলার করটিয়া, বাজিতপুর, বাসাইলের করাতিপাড়া, দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল, চণ্ডি প্রমুখ।

তারটিয়া পালপাড়ার প্রতীমা শিল্পী পরিমল পাল জানান, প্রতীমা তৈরি তাদের পৈত্রিক ব্যবসা। পৈত্রিক ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য তিনি কাজ করছেন। তিনি এবার ১০টি প্রতীমা গড়েছেন। এতে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশা করছেন তিন লাখ টাকার মত তিনি পাবেন।

টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার ঝন্টু বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ এবং আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি আমাদের লোকজনও কাজ করবেন। প্রতি বছরের মত এবারো সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি মণ্ডপের জন্য চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যও দায়িত্ব পালন করবে। অপরদিকে মোবাইল টিম, সাদা পোশাকের পুলিশও কাজ করবে। সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

পঞ্জিকা মতে, ২৮ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মর্তলোকে দেবীর আগমনী বার্তা বেজে উঠবে। ৪ অক্টোবর ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দেবীর নবপত্র কল্পারম্ভ ষষ্ঠী পুজা। ওই দিন মন্ডপে মন্ডপে বেঁজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাসর ধ্বণি। ৫ অক্টোবর সপ্তমী পুজা, ৬ অক্টোবর অষ্টমী পুজা, ৭ অক্টোবর নবমী, ৮ অক্টোবর দশমী বিহীত পুজা ও দশহারার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী পুজার সমাপ্তি হবে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno