আজ- ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সকাল ৮:২১

মধুপুরে শতাধিক অবৈধ করাতকলে উজাড় বন

 

দৃষ্টি নিউজ:

দেশের তৃতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক বন মধুপুর শালবন আজ চরম হুমকির মুখে। এই বনের বেশিরভাগই উজাড় হয়ে গেছে। যেসব কারণে এই বৃহত্তর বন উজাড় হচ্ছে, এর মধ্যে অবৈধ করাতকল অন্যতম। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় বনের বুকে গড়ে উঠেছে শতাধিক অবৈধ করাতকল। রাতের আঁধারে বন উজাড় করে এই অবৈধ করাতকলেই চিড়াই করে হজম করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগ দুর্বৃত্তদের সহায়তা করে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার যোগসাজশে অবৈধ করাতকলের মালিকরা নির্বিঘ্নে তাদের মিল চালিয়ে যাচ্ছেন। করাতকলের মালিকরা সমিতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে দিচ্ছেন ওই নেতার পকেটে। কবে করাতকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু এসহাক জানান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে কিছু চাঁদা তুলে দেই তাকে।
বন এলাকার মধ্যে কোনো প্রকার করাতকল না থাকার কথা থাকলেও উপজেলার চারটি বিটে শতাধিক করাতকল চোখে পড়বে। শুধুমাত্র মহিষমারা বিটের মধ্যেই রয়েছে ৩৯টি কলাতকল। এই বিটের শালিকা বাজারে চারটি, গারোবাজারে ছয়টি, জয়নাতলী বাজারে চারটি, চাপড়ি বাজারে দুটি, নেদুর বাজারে তিনটি ও মোটেরবাজারে ছয়টি করাতকল রয়েছে। শালিকা বাজারের করাতকল মালিক মোতালেব হোসেন, মিস্টার আলী ও আমজাদ আলী জানান, বন কর্মকর্তা এবং নেতাদের টাকা-পয়সা দিয়ে মিল চালাতে হয়।
কুড়ালিয়া বাজারের সোহেল রানা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে টাকা দিয়ে অবৈধভাবে সোহেল স’মিল নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন। অবৈধ করাতকলকে ইউনিয়ন পরিয়দ ট্রেড লাইসেন্স দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে কুড়ালিয়া ইউপি সচিব মো. আনোয়ার হোসেন জানান, অবৈধ ব্যবসাকে লাইসেন্স দেয়ার নিয়ম নেই। তিনি বলেন, এমনটি হয়েছে কিনা খোঁজ নিয়ে দেখব।
মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু এসহাক জানান, স্থানীয় এমপি এবং ইউএনও একবার করাতকল বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি।
চাড়ালজানি বিট কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান অবৈধ করাতকল বন্ধ করতে না পারায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, একবার পাঁচটি করাতকলের চাকা খুলে আনলে স্থানীয় নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে।
সহকারী বন কর্মকর্তা (এসিএফ) এমএ হাসান বলেন, আমরা বনের ভেতর অবৈধ করাতকল বন্ধের চেষ্টা করছি। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় নেতারা সজাগ না হলে প্রশাসনের একার পক্ষে বন রক্ষা করা যাবে না। এসিএফের সঙ্গে আলোচনা করে দেখব, কিভাবে এই ঐতিহ্যবাহী বন রক্ষা করা যায়।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno