আজ- ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  দুপুর ১২:০৩

মহান মে দিবস আজ :: বঞ্চনা নিয়েই এদেশের শ্রমিকদের পথচলা

 

দৃষ্টি নিউজ:


রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, লোকজনের নেতিবাচক কথা শুনে বছরের পর বছর অনিরাপদ কর্মক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সস্তায় শ্রম দিয়েও দেশের শ্রমিকরা অবহেলিত। কৃষি, পোশাক এবং প্রবাসী দেশের প্রধান এই তিন শ্রেণির শ্রমিকরাই প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। আর অন্য শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশার খবরও জানা নেই অনেকের। অবহেলা ও বঞ্চনার কারণে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি শ্রমিকদের ভাগ্যের পরিবর্তন যেন অধরাই থেকে যাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় আজ বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের রক্তঝরা সংগ্রামের গৌরবময় দিন ‘মে দিবস’ পালিত হচ্ছে।
আঠারো শতকের শেষ দিকে নিপীড়িত শ্রমিকরা প্রতিবাদ করে সৃষ্টি করেছিলেন নতুন এক ইতিহাস। যে ইতিহাসের পাতায় বিজয় লেখা হয়েছে শ্রমজীবীদের। যে লড়াই তারা করেছিলেন কর্মঘণ্টা কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা করার দাবিতে। বৈশ্বিক বাস্তবতায় এখন দেশে শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা কমে এসেছে। কোথাও ৮ ঘণ্টা বা কোথাও তার চেয়ে কিছু বেশি। দেশের শ্রম আইনে এ কর্মক্ষম শ্রমিকদের জন্য দৈনিক ৮ ঘণ্টা কর্ম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু আইএলও কনভেনশনের বাকি শর্তগুলো নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। নিরাপদ কর্মক্ষেত্র, স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলা, মাতৃকালীন ছুটি, পরিবহন সুবিধাসহ নানা ধরনের সুবিধা শুধু কাগজে-কলমেই রয়েছে। বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা মূলত তিন শ্রেণির শ্রমিকের ঘামে সচল থাকে। কৃষিতে দিনমজুর শ্রমিক, প্রবাসী আয়ে প্রবাসী শ্রমিক আর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে পোশাক শ্রমিক। জীবনযাত্রার মৌলিক চাহিদা মিটিয়ে শ্রমিকরা খুব ভালো আছেন তা বলা যাবে না। ছোট একটি পরিবারের মৌলিক চাহিদা মেটাতেও প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
শ্রমশক্তিতে বিশেষ অবদান রাখা কৃষকরা অক্লান্ত শ্রম আর ঘামের বিনিময়ে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। দিনপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পান কৃষি দিনমজুররা। আর অধিকাংশ সময়ই তাদের বেকার থাকতে হয়। অনেকে আয় ও সুযোগ-সুবিধা বেশি হওয়ায় উন্নত জীবনের আশায় পেশা পরিবর্তন করছেন। কৃষি কাজ ছেড়ে রিকশাচালক, হোটেলের বয়, কারিগর, পোশাক কারখানার কর্মী এবং বিভিন্ন শিল্পকারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। ফলে একসময় শ্রমশক্তিতে বিশেষ অবদান রাখা কৃষি খাত থেকে শ্রমশক্তি চলে যাচ্ছে শিল্প ও সেবায়।
সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর (বিবিএস) লেবার ফোর্স সার্ভে-২০১৬-১৭ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে শ্রমশক্তির ক্ষেত্রে কৃষির অবদান ৪০ দশমিক ৬ শতাংশ। তার আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের হিসাবে কৃষির অবদান ছিল ৪২ দশমিক ৭ শতাংশ। এক্ষেত্রে ১ বছরের ব্যবধানে শ্রমশক্তিতে কৃষির অবদান কমেছে ২ দশমিক ১ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরে দেশে কৃষি ক্ষেত্রে নিয়োজিত ছিল ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার শ্রমিক। এদের মধ্যে পুরুষ ছিল ১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার এবং মহিলা ১ কোটি ১১ লাখ ২৮ হাজার। কৃষি শ্রমিকের মধ্যে গ্রামে ছিল ২ কোটি ২৬ লাখ ৯৯ হাজার শ্রমিক এবং শহরে ছিল ১৯ লাখ ৯৪ হাজার শ্রমিক। অন্যদিকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষি খাতে নিয়োজিত ছিল ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার শ্রমিক। এদের মধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৪১ লাখ ৮৮ হাজার এবং মহিলা ১ কোটি ১২ লাখ ১০ হাজার। তুলনামূলক পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে কৃষি খাতে শ্রমিক কমেছে ৭ লাখ ৫ হাজার।
দিনাজপুর জেলার কৃষক আমীর আলী আক্ষেপ করে বলেন, পূর্বপুরুষের কাছ থেকে শুধু কৃষিকাজই শিখেছেন। গত ২৫ বছর এই কাজ করেই সংসার চলেছে। কিন্তু উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়া এবং মৌসুমের কারণে অন্যের জমিতে শ্রম দিয়েও বাজারদরের তুলনায় মজুরি না পাওয়ায় কৃষিকাজ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এখন মৌসুমি পেশায় নিয়োজিত এই কৃষকের ৮ কর্মঘণ্টাসহ আইএলও কনভেনশনের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলা, নিরাপদ কর্মক্ষেত্র, পরিবহন সুবিধা বিষয়ে কোনো ধারণা নেই। অতিরিক্ত সুবিধার বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে তার মাথায় একটাই চিন্তা ৪ সদস্যের পরিবারের আহার কীভাবে জোগাড় করবেন।
শুধু কৃষক নয়, নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত পোশাক শ্রকিরাও। যাদের শ্রম ও ঘামে দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে। এই পোশাক শ্রমিকদের অবস্থাও এখন পর্যন্ত্ম যৌক্তিক পর্যায়ে উন্নতি হয়নি। সর্বশেষ ২০১৩ সালে মজুরি কমিশন নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করে ৫ হাজার ৩০০ টাকা। যা পার্শ্ববর্তী যে কোনো দেশের তুলনায় অর্ধেক। সে হিসেবে প্রতিদিন আয় হয় ১৭৬ টাকার মতো। তবে বেতনের চেয়ে সবচেয়ে বড় শঙ্কা এখন পর্যন্ত অনেক গার্মেন্টসেই শ্রমিকদের কোনো স্বীকৃতি নেই। ঢাকা ও গাজীপুরে কর্মরত ৭২.৭০ শতাংশ পোশাক শ্রমিকের বৈধ নিয়োগপত্র নেই। আর নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে এ হার ৬০ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থাৎ যে কোনো সময় চাকরিচু্যত হওয়ার ভয় রয়েছে পোশাক শ্রমিকদের। এত কিছুর পরও আগের চেয়ে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নত হয়েছে এই খাতের শ্রমিকদের। ২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা ধসের মধ্য দিয়ে ঘটে যাওয়া ইতিহাসের মর্মন্তুদ দুর্ঘটনার পর গত পাঁচ বছরে পোশাক শিল্পকে টেকসই, নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়। এ দেশে সংস্কারমূলক তদারকি প্রতিষ্ঠান অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ন্যাশনাল ত্রিপত্র অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণ করা হয়। ক্রেতাদেশগুলোর শর্তানুযায়ী সাসটেইনেবল কমপ্যাক্ট বাস্তবায়নেরও উদ্যোগ নেয়া হয়। এসব কর্মকান্ডের ধারাবাহিক উন্নতির ফলে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এখন অনেক বেশি পরিণত ও নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সার্বিক কমপ্লায়েন্স ছাড়া এখন কোনো কারখানাই রপ্তানি শিল্পের জন্য বিবেচিত হচ্ছে না। এর ফলে বাংলাদেশ এখন সবুজ শিল্পায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। লিড সার্টিফাইড ১০টি কারখানার মধ্যে ৭টি কারখানার অবস্থানই বাংলাদেশে। ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল থেকে আমাদের ৬৭টি কারখানা লিড সনদ পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৩টি প্লাটিনাম কারখানা। আরও ২৮০টি কারখানা সনদ পাওয়ার পাইপলাইনে আছে। তা এখন বিশ্বে নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে বাংলাদেশকে রোল মডেল স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। ফলে নিশ্চিত হয়েছে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের নিরাপদে কাজ করার পরিবেশ। তবে মজুরি ও কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আগের চেয়ে একটু উন্নত হলেও স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলা, মাতৃকালীন ছুটি, পরিবহন সুবিধাসহ আইএলও কনভেনশনের শর্তগুলোর সুবিধা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
কৃষক ও পোশাক শ্রমিকের মতো যাদের পাঠানা প্রবাসী আয় বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে সেই প্রবাসী শ্রমিকরাও নানাভাবে সুবিধা বঞ্চিত। প্রবাসে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। বিদেশে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা থাকলেও অদক্ষ শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রম করেও টিকে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। আর প্রবাসী নারী শ্রমিকরা শুধু সুবিধা বঞ্চিতই নয়, অমানবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুয়ায়ী, বর্তমানে ৭ লাখ নারী কর্মী বিদেশে অবস্থান করছেন। লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, ওমান, মরিশাস, কুয়েত, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে নারী শ্রমিকরা কাজ করতে যাচ্ছেন। নারী শ্রমিকরা পুরুষদের চাইতে কম উপার্জন করলেও তারা তাদের আয়ের ৯০ শতাংশ টাকাই দেশে পাঠিয়ে দেন। যেখানে পুরুষ শ্রমিকরা পাঠান মাত্র ৫০ শতাংশ। এ থেকেই প্রতীয়মান হয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বাংলাদেশের নারীদের রয়েছে বড় ভূমিকা। কিন্তু কেমন আছেন অভিবাসী নারী শ্রমিকরা এ খবর রাখার প্রয়োজন মনে করে অনেকেই। বাস্তবতা হচ্ছে, বিদেশে গৃহকর্মী হিসেবে নারী শ্রমিকদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি হলেও নির্যাতনের শিকার তারাই বেশি হন। যৌন নির্যাতন, খেতে না দেয়া, বেতন না দেয়া, কাজে ভুল হলেই মারধর, এক বাড়ির কথা বলে একাধিক বাড়িতে মাত্রাতিরিক্ত কাজ করানো, মিথ্যা মামলা দেয়া- এমন নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেকেই। কেউ কেউ এক বছর ধরে সেফ হোমে আছেন এমন তথ্যও পাওয়া গেছে।
কৃষি, পোশাক এবং প্রবাসী প্রধান এই তিন শ্রেণির শ্রমিকরাই আন্ত্মর্জাতিক শ্রম আইন অনুযায়ী প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এর বাইরের রিকশাচালক, হোটেলের বয়, কারিগর, পোশাক কারখানার কর্মী এবং বিভিন্ন শিল্পকারখানায় শ্রমিকের অধিকাংশ জানে না তাদের জন্য শ্রম আইনে কি সুবিধা আছে। আর বঞ্চিতই হচ্ছে কতটুকু। বিভিন্ন পেশার শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৮ কর্মঘণ্টা কথা, কর্মক্ষেত্রের নিরাত্তার কথা, পরিবহন সুবিধা আন্তর্জাতিক শ্রম আইনে শ্রমিকের জন্য যেসব সুবিধার কথা আছে কোনোটাই তারা জানে না। তারা শুধু জানে অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজেকে এবং পরিবারকে চালাতে হবে।
মে দিবস ও শ্রমিকের প্রাপ্য অধিকারের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, শ্রমিকরা দেশের সম্পদ। এরাই দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। দেশে দেশে এখন মে দিবসের প্রেক্ষাপট পাল্টেছে। এখন আর কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা করার দাবিতে আন্দোলন নয় বরং শ্রমিকদের সার্বিক স্বার্থ নিয়েই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক মে দিবসে আসে। বাংলাদেশে বড় দুটি রাজনৈতিক দলে নামকাওয়াস্তে শ্রমিক সংগঠন আছে। আর যেসব প্রকৃত শ্রমিক সংগঠন শ্রমিকদের দাবিদাওয়া বা অধিকার নিয়ে আন্দোলন করে তাদের পেছনে বিশেষ বাহিনী লেলিয়ে দেয়া হয়। এজন্যই শ্রমিকরা সুবিধা বঞ্চিত থেকে যায়।
প্রসঙ্গত, অধিকার আদায়ে শ্রমিকদের আত্মত্যাগের স্মরণে ১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে দিনটিকে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের সব দেশেই আজ পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। দিবসটি উপলক্ষে এদেশেও নেয়া হয়েছে ব্যাপক কর্মসূচি। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে বিপুল উদ্দীপনা নিয়ে মে দিবস পালিত হয়। ওই বছরই সদ্য স্বাধীন দেশে পহেলা মে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাষ্ট্রীয়ভাবে মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মে দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিকাল ৪টায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী এবং সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সমাবেশ, রযালি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮৮৬ সালের এই দিনে শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সব শিল্পাঞ্চলে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন। সেই ডাকে শিকাগো শহরের তিন লাখের বেশি শ্রমিক কাজ বন্ধ রাখেন। শ্রমিক সমাবেশকে ঘিরে শিকাগো শহরের হে মার্কেট রূপ নেয় শ্রমিকের বিক্ষোভ সমুদ্রে। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশ শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে ১০ শ্রমিক প্রাণ হারান। এর পরপরই হে মার্কেটের ওই শ্রমিক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। গড়ে ওঠে শ্রমিক-জনতার বৃহত্তর ঐক্য। অবশেষে তীব্র আন্দোলনের মুখে শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। পরে ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তঝরা অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ১ মে তারিখটিকে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৮৯০ সাল থেকে প্রতি বছর দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করতে শুরু করে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno