আজ- ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  সন্ধ্যা ৬:২৪

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ ২৮ ফেব্রুয়ারি

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় বাদিপক্ষের দুইজনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার(৩১ জানুয়ারি) দুপুরে এই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইল-৩(ঘাটাইল) আসনের সরকার দলীয় সদ্য সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার উপস্থিতিতে দুইজনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আদালতের বিচারক মাকসুদা খানম আগামি ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার আদালত কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। সে অনুয়ায়ী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে এ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এমপি রানাকে টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালতে হাজির করা হয়।
পরে সকাল ১১টা ১০মিনিটে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাকসুদা খানম এ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন। রাস্ট্রপক্ষ এ মামলার সাক্ষী ফারুক হোসেন মানিক ও বারেকের সাক্ষ্য গ্রহনের জন্য হাজিরা প্রদান করে এবং তাদের সাক্ষ্য গ্রহন করে। পরে মামলার বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা দুপুরে এ দুই সাক্ষীর জেরা সমাপ্ত করেন। জেরা করার পর আদালতের বিচারক আগামি ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার অন্যান্য সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে আদালতে মোট ১৩জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হল।
প্রকাশ, দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর সাবেক এমপি রানা বিগত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিন্ম-আদালতে আবেদন করেও তিনি জামিন পাননি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন এমপি রানা ও তার তিনভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
তদন্ত চলাকালে ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার ঘনিষ্ঠ কর্মী আনিসুর রহমান রাজা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে তিনদফায় মোট ১৫ দিন রিমান্ড শেষে ওই বছরের ২৭ আগস্ট টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদত হোসেনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অপর আসামি মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন একই বছরের ২৪ আগস্ট। তিনি দশদিনের রিমান্ড শেষে ৫ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুন নাহারের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। উভয় আসামির জবানবন্দিতে ফারুক আহমদ হত্যাকান্ডে টাঙ্গাইল-৩(ঘাটাইল) আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার ছোট ভাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করলে এই হত্যাকা-ের সাথে খান পরিবারের চার ভাইয়ের জড়িত থাকার কথা প্রথম প্রকাশ পায়। এ হত্যাকান্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে আমানুর রহমান খান রানার অপর ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তদানিন্তন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন যুক্ত বলে মোহাম্মদ আলী তার জবানবন্দিতে প্রকাশ করেন। গত ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। বর্তমানে মামলার সাক্ষীগ্রহন চলছে।
এদিকে, টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে রানাকে বাদ দিয়ে তার বাবা আতাউর রহমান খানকে দলীয় মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। আতাউর রহমান খান দলের মনোনয়ন পেয়ে এবাবের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী হন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno