আজ- ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার  রাত ৯:৫২

রণদা প্রসাদ হত্যার অভিযোগ রাজাকার মাহবুবের বিরুদ্ধে

 

দৃষ্টি নিউজ:


মুক্তিযুদ্ধের সময় দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলেসহ সাতজনকে হত্যার অভিযোগে টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্্যনালের তদন্ত সংস্থা। ৬৯ বছর বয়সী মাহবুবুর একাত্তরে মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি বৈরাটিয়া পাড়ার আবদুল ওয়াদুদের ছেলে। আসামি মাহবুবুর ও তার ভাই আবদুল মান্নান রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন। বৃহস্পতিবার(২ নভেম্বর) সকালে ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে যুদ্ধাপরাধের ৫৪তম প্রতিবেদনের সার-সংক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান ও জ্যেষ্ঠ সমন্ব্বয়ক সানাউল হক।
হান্নান খান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়। ‘তারা রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব এবং রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ সাতজনকে তুলে নিয়ে হত্যা করে তাদের লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, মাহবুবুর রহমান একসময় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক ছিলেন। তিনি নির্দলীয়ভাবে তিন-তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেও প্রতিবারই পরাজিত হন।
গত বছরের ১৮ এপ্রিল মামলাটির তদন্ত শুরুর পর ট্রাইবু্্যনাল থেকে পরোয়ানা জারি হলে গত নভেম্বরে মাহবুবুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন গাজীপুরের কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমসের আশপাশের এলাকা, নারায়ণগঞ্জের খানপুরের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও এর আশপাশের এলাকা এবং টাঙ্গাইল সার্কিট হাউস এলাকায় অপরাধ সংঘটন করেন।
মামলাটি তদন্ত করেছেন সংস্থার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান। দেড় বছরেরও বেশি সময়ের তদন্তে তার বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং গণহত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে এই তদন্ত কর্মকর্তা জানান।
সানাউল বলেন, তদন্তকালে ৬০ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে এবং মোট ১০০ পাতার নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। সব মিলে চার ভলিউমে ৩৮০ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। শিগগিরই সেটা প্রসিকিউশনে জমা দেয়া হবে।
মানবহিতৈষী কাজে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত থাকায় ব্রিটিশ সরকার রায় বাহাদুর খেতাব দিয়েছিল রণদা প্রসাদ সাহাকে। মানবসেবায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে সরকার তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেয়। তিনি আরপি সাহা নামেও সমধিক পরিচিত।
রণদা প্রসাদ সাহার পৈতৃক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা; থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে।
ওই বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলে এবং অন্যদের ধরে নিয়ে যায় আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগীরা।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno