আজ- ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  বিকাল ৪:৫১

রূপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার চতুর্থ দফায় সাক্ষ্য গ্রহণ

 

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আদালতে চতুর্থ দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার(৯ হানুয়ারি) বেলা ১২টায় টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। চতুর্থ দফায় মোট তিন জন সাক্ষ প্রদান করেন। প্রথমে সাক্ষ্য দেন নিহত জাকিয়া সুলতানা রূপার ভাই হাফিজুর রহমান, দ্বিতীয় সাক্ষী দেন আব্দুল বারেক, তৃতীয় সাক্ষী দেন মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
নিহত রূপার ভাই হাফিজুর রহমান আদালতে সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য প্রদানকালে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীরাও তার কান্না দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে প্রায় এক ঘণ্টা জেরা করে।
পরে মামলার সাক্ষী আব্দুল বারেক ও মমতাজ উদ্দিন সাক্ষ্য প্রদান করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের বেলা সোয়া দু’টা পর্যন্ত জেরা করেন। মামলাটির দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির জন্য আদালতের বিচারক আগামি বোরবার(১৪ জানুয়ারি) মামলার পাঁচ আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডকারী চারজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি একেএম নাছিমুল আখতার জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন। চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম পর্ব চলে বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা ১৫মিনিট পর্যন্ত। এতে মোট তিনজন সাক্ষী সাক্ষ্যপ্রদান করেন। তারা হচ্ছেন হাফিজুর রহমান, আব্দুল বারেক ও মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
আগামিকাল বুধবার(১০ জানুয়ারি) বাকি চার জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালতের বিচারক। এর আগে ৩ জানুয়ারি প্রথম সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম। ৭ জানুয়ারি সাক্ষ্য প্রদান করেন চার সাক্ষী। তারা হচ্ছেন আব্দুর রশিদ, মামলার বাদি প্রবিন এন কুমার, মো. আবুল হোসেন ও মো. রহিজ উদ্দিন। ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্য প্রদান করেন চার জন। তারা হচ্ছেন এমএ রৌফ, মো. ইমান আলী, মো. হাসমত আলী ও মো. লাল মিয়া।
এ সময় তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ছোঁয়া পরিবহনের সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীর (৫৫) বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধিত ২০০৩) ৯ এর তিন ধারায় গণধর্ষণের অভিযোগ এবং দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ, ২০১ ধারায় লাশ গুমের অভিযোগ এবং ৩৪ ধারায় সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে চার্জশিটে। চার্জশীটে ৩২জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুলিশ, চিকিৎসকসহ পাঁচ-ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন।
এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের সহায়তা ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন শামীম চৌধুরী দয়াল ও ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রূপার মরদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় মহিলা হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে সনাক্ত করেন। ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর এবং চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেককেই আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার আসামিরা প্রত্যেকেই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno