আজ- ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার  সকাল ১০:৪২

হালকা রঙের পাতলা সুতি পাঞ্জাবিতে সবার নজর!

 

দৃষ্টি নিউজ:

ঈদের বাজারে ছেলেদের প্রধান আকর্ষণ থাকে সুন্দর পাঞ্জাবিতে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে বেশকিছু দিন ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে দাবদাহ বয়ে যাওয়ায় এর স্পষ্ট প্রভাব পড়েছে এবারের ঈদের পোশাকেও। এবারের ঈদে রঙিন ও মোটা কাপড় বাদ দিয়ে ক্রেতারা কিনছেন পাতলা সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবি। রঙের দিক থেকেও উজ্জ্বলের চেয়ে সাদা কাপড়েই ক্রেতাদের নজর বেশি।
ঈদ উপলক্ষে এরই মধ্যে মার্কেটগুলোতে বিপুল পরিমাণ পাঞ্জাবি তুলেছেন বিক্রেতারা। এখন বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও বেশ ভালো। শুক্রবার(২৪ মে) বিক্রেতাদের বাড়তি টার্গেটও রয়েছে ছুটির দিনকে ঘিরে। প্রায় প্রতিটি মার্কেটেই এখন যে পোশাকটি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে তা হলো পাঞ্জাবি। ফ্যাশনেবল সব পাঞ্জাবিতে এরই মধ্যে বাজার ছেয়ে গেছে। তবে এবারের ঈদ বাজারে যে বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষণীয় তা হলো মানুষের চাহিদায় অন্য বছরের তুলনায় বেশ পার্থক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এ পার্থক্য মূলত তাপমাত্রার কারণে। এখন সারাদেশে যে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে তার জন্য ক্রেতারা রঙিন ও মোটা কাপড়ের পাঞ্জাবি অনেকটা এড়িয়ে চলছেন। এতে করে চাহিদা বেড়েছে সাদা রংয়ের সুতি পাঞ্জাবির। বিক্রেতারাও অবশ্য গরমের বিষয়টি মাথায় রেখে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তারাও এবার অন্য যে কোনো বারের চেয়ে সাদা পাঞ্জাবিই বেশি তুলেছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এবার যেহেতু পুরো গরমের সময় ঈদ পড়ছে তাই আগে থেকেই বিষয়টি তাদের মাথায় ছিল।
বাজারে থাকা সাদা সুতির পাঞ্জাবির পাশাপাশি অন্য রংয়ের সুতির পাঞ্জাবির কদরও রয়েছে। তবে তা সাদার চেয়ে বেশি নয়। সিম্পল সাদা পাঞ্জাবির মধ্যে শুধুমাত্র বুকের কাছে হালকা কাজ করা পাঞ্জাবির কদর বেশি। আবার কিছু আছে কোনো কাজ ছাড়াই। এগুলোতে শুধুমাত্র বোতামের সারির একটু পুরো দাঁড়টির বাইরে তেমন কোনো নকশাই নেই। এ ধরনের পাঞ্জাবির কদরই বেশি।
এর বাইরে বাজারে থাকা পাঞ্জাবির মধ্যে অনেক ধরনের ফ্যাশনেবল পাঞ্জাবিও রয়েছে। যার মধ্যে তাগানকশিকাঁথা, মুসলিম গ্যালারি আর্ট, আধা সিল্ক, আধা জর্জেট, বাইজেনটাইন স্টাইলসহ বিভিন্ন পাঞ্জাবিই প্রধান। পুরো রঙিন পাঞ্জাবিও আছে। এসব পাঞ্জাবিতে বিভিন্ন ধরনের নকশা ও জরির কাজও রয়েছে। কোনো কোনো কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখা গেল, লম্বা ও খাটো-দুই ধরনের পাঞ্জাবিই রয়েছে সেখানে। এখানকার পাঞ্জাবিগুলোতে মুসলিম শাসনামলের বিভিন্ন নকশাও প্রাধান্য পেয়েছে। কয়েকটিতে আছে ছাপার কাজ। এছাড়া হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি, সুতার নকশা, বাটিক, কাতান কাপড়ের নকশাও রয়েছে। ভিসকস, খাদি, বিদেশি কাপড় দিয়েও তৈরি করা হয়েছে ঈদের পাঞ্জাবি। তবে সেগুলো বিক্রি তুলনামূলক কম।
এবার ঈদ বাজারের সব মার্কেটে পাঞ্জাবি উঠলেও বসুন্ধরা সিটি, নিউ মার্কেট, ইস্টার্ন মল্লিকা, ইস্টার্ন প্লাজা, আজিজ সুপার, এলিফ্যান্ট রোড, বেইলি রোড, ধানমন্ডি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ নামকরা ভিআইপ মার্কেটগুলোতেই ক্রেতাদের ঢল বেশি। এ কারণে এসব মার্কেটে কালেকশনও অন্য যে কোনো মার্কেট থেকে অনেক বেশি।
পাঞ্জাবির মার্কেট ঘুরে দেখা যায় সর্বনিম্ন ৫শ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকার পাঞ্জাবি বাজারে রয়েছে। তবে ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি কিনছেন, দেড় থেকে চার হাজার টাকার মধ্যকার পাঞ্জাবি। ফলে এ দামের পাঞ্জাবির কালেকশনও বেশি। এ দামের মধ্যেই রয়েছে বেশিরভাগ সুতির পাঞ্জাবিই।
রাজধানীর নিউ মার্কেটের সুপার বিতান নামক স্টলে গিয়ে দেখা যায় ঢলে সুন্দর সুন্দর সব পাঞ্জাবি পরিয়ে রাখা হয়েছে। লাইটের উজ্জ্বল আলোতে প্রতিটি পাঞ্জাবি চকচক করছে। কিছুক্ষণ পর পর দোকানের বিক্রয়কর্মী তার উপর ঝাড়ু দিয়ে নেড়েচেয়ে দিচ্ছে। যাতে কোনো ময়লা এর উপর পড়তে না পারে। এ দোকানে স্বামীর জন্য পাঞ্জাবি কিনতে এসেছেন ফারজানা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগে ইচ্ছা ছিল একটি গর্জিয়াস পাঞ্জাবি কিনব। কিন্তু যেভাবে টানা গরম পড়ছে তাতে এখন সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস দেখেই কিনব ভাবছি। সুতার অনেকগুলো পাঞ্জাবি দেখলাম। তবে সাদাটিই বেশি ভালো লাগছে। কোনটি কিনব এখনো ঠিক করিনি। তবে সাদা একটি সিম্পল পাঞ্জাবি কিন্তু দেখতে সুন্দর হবে এমনটিই খুঁজছি। মনের মতো পেলেই কিনে ফেলব।’
এ দোকানের ম্যানেজার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘এবারের ঈদ যে ভরপুর গরমের মধ্যেই পড়বে তা আমরা আগে থেকেই জানতাম। এ কারণে অন্য সব পাঞ্জাবির পাশাপাশি সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবিই বেশি তুলেছি। আবার রংয়ের মধ্যে সাদাটিই বেশি তুলেছি। ক্রেতারাও এগুলোই বেশি কিনছে। তবে এর পাশাপাশি আমাদের দোকানে খাদি, এন্ডি, এন্ডিসিল্ক, জয়সিল্ক, দুপিয়ান, পাঞ্জাব, কাবলীর কালেকশনও রয়েছে। ক্রেতারা যেটা চায় সেটিই দিতে পারব।’
আবার বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোড ও ধানমন্ডির কয়েকটি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় এখানকার পাঞ্জাবিতেও সুতি কাপড়ের প্রাধান্য বেশি। সুতির পাশাপাশি এন্ডি, এন্ডিসিল্ক, দুপিয়ান, তাঁতে বোনা সুতি কাপড়, টুটোন কাপড়ও ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এসব কাপড়ের অনেকটিতে আবার সুতির সঙ্গে এগুলোর মিশেল দিয়ে আলাদা একটা ফ্লেবারও তৈরি করা হয়েছে। এখানকার বিক্রেতারাও জানালেন বিক্রির দিক দিয়ে এগিয়ে আছে সুতির কাপর। আর রংয়ের দিক দিয়ে সাদা পাঞ্জাবি। তবে অন্য কাপড় ও রংয়ের পাঞ্জাবিও চলতে ঈদের বাজারে।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno