আজ- বুধবার | ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
১৭ বৈশাখ, ১৪৩২ | দুপুর ১২:৫২
৩০ এপ্রিল, ২০২৫
১৭ বৈশাখ, ১৪৩২
৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ১৭ বৈশাখ, ১৪৩২

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

দৃষ্টি নিউজ:

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, প্রিয় নবীর দরবারে লাখো দরুদ ও সালাম। আজ ১২ রবিউল আউয়াল(১০ নভেম্বর) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। এ দিবসটি একই সঙ্গে আনন্দের এবং দুঃখেরও। এই দিনেই আমাদের প্রিয় নবী, বিশ্বমানবতার আশীর্বাদ হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস। এই দিনে সৃষ্টিকুলের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন ঘটেছিল দুনিয়াতে। একই দিনে এই মহামানব দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে মৃত্যুর পথে পাড়ি জামান। ১২ রবিউল আউয়ালকে মুসলিম বিশ্ব মহানবীর জন্ম ও ওফাতের দিবস হিসেবে পালন করে থাকেন।

৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল আমাদের শেষ নবী, নবীকুলের শিরোমণি হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের পবিত্র মক্কানগরীতে সম্ভ্রান্ত কোরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। একই দিনে তিনি ৬৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। এই দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য যে সমধিক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মুসলিম বিশ্ব বিভিন্নভাবে আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করে বিশেষ আনুষ্ঠানিকতায় দিবসটিকে সামনে নিয়ে আসে। এই দিনের কথা স্মরণে এনে মুসলমানরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে ঘরে ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দকে ভাগ করে নেয়। আনুষ্ঠানিকতায় নিয়ে আসে ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশ। রবিউল আউয়ালের এই রজনীতে গোটা দুনিয়ায় ধ্বনিত হয়- ‘ইয়ানবী সালামু আলাইকা, ইয়া রাসুল সালামু আলাইকা।’ এই দিনের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রিয় রাসুল সম্পর্কে পবিত্র কোরআন শরিফে ঘোষণা করেছেন- ‘আমি আপনাকে সারাবিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করছি’ (সুরা আল আম্বিয়া, আয়াত-১০৭)।’

আল্লাহপাক তার প্রেরিত হাবিব সম্পর্কে সুরা আল সাবার ২৮ নম্বর আয়াতে এভাবে বর্ণনা করেছেন-‘হে রাসুল আমি আপনাকে বিশ্বের সমগ্র মানবজাতির সংবাদদাতা এবং সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দুনিয়ায় সাম্য, শান্তি এবং সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে আমাদের শেষ নবী (সা.) চিরজাগরূক থাকবেন, চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। সে ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ এবং তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করে থাকেন। অতএব, হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবীর শানে দরুদ পাঠ করো এবং সালাম প্রেরণ করো।’ তাই প্রতিদিন প্রতিক্ষণে বিশ্বের প্রতি প্রান্তে অযুত কণ্ঠে ধ্বনিত ও প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরছে তার মহিমাগাথা। ফরাসি দার্শনিক লা মার্টিনের ভাষায় তিনি একাধারে দার্শনিক, বাগ্মী, বাণীবাহক, আইন প্রণেতা, যোদ্ধা, সর্বমতবাদের ওপরে বিজয়ী, যুক্তিপূর্ণ বিশ্বাসের ও ধর্মীয় মতবাদের প্রবর্তক এবং দুনিয়ার বুকে বিশটি পার্থিব সাম্রাজ্যসহ একটি একক আধ্যাত্মিক সাম্রাজের প্রতিষ্ঠাতা। সিরাতে ইবনে হিশাম ও ইবনে কাছিরে রয়েছে যে, তিনি মক্কা বিজয়ের দিনও ছিলেন অত্যন্ত বিনয়াবনত, দরদি ও সহনশীল। তার মাধ্যমেই মিল্লাতে আবা ইব্রাহিমের ধর্মাদর্শ পবিত্র ইসলামকে পরিপূর্ণতা দান করা হয়েছে।

উল্লেখ আছে, জগতের সকল ধর্ম প্রবর্তক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের মধ্যে তিনিই হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (স:) হচ্ছেন সর্বাপেক্ষা সফল। খ্রিস্টান ঐতিহাসিক মাইকেল এইচ হার্ট তার জগৎখ্যাত ‘দি হান্ড্রেড’ গ্রন্থে নবীজীকে বিশ্ব ইতিহাসে সর্বাধিক প্রভাব বিস্তারকারী নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে এক নম্বরে স্থান দিয়েছেন। বস্তুত মহান আল্লাহতায়ালা সর্বশেষ নবী হিসাবে হজরত মুহাম্মদ মোস্তফাকে (স:) একটি পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ জীবন বিধান ইসলামসহ দুনিয়ায় প্রেরণ করেছিলেন বিশ্বজাহানের রহমতস্বরূপ। মানবতার কল্যাণে তিনি তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেন। তার জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ, কথা, কাজ গোটা মানবজাতির জন্য এক অনুপম আদর্শ।

বিশ্বনবীর বিদায় হজের ভাষণ মানবাধিকারের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দলিল। আমাদের জন্য তিনি রেখে গেছেন পবিত্র কুরআন আর সুন্নাহ। সেই সঙ্গে বলেছেন, ‘তোমরা এ দুটোকে আঁকড়ে রেখো।’

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স:) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আজ সরকারি ছুটির দিন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়