আজ- শনিবার | ২২ মার্চ, ২০২৫
৮ চৈত্র, ১৪৩১ | সকাল ৯:৪৯
২২ মার্চ, ২০২৫
৮ চৈত্র, ১৪৩১
২২ মার্চ, ২০২৫, ৮ চৈত্র, ১৪৩১

আজ পবিত্র শবে বরাত

দৃষ্টি রিপোর্ট:

আজ শুক্রবার(১৪ ফেব্রুয়ারি) পবিত্র শবে বরাত। যথাযথ মর্যাদায় ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে সারা দেশে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে। পাপ থেকে সর্বান্তঃকরণে ক্ষমা প্রার্থনা করে মুসলমানদের নিষ্কৃতি লাভে স্রষ্টার পানে দু’হাত তুলবে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। তবে পবিত্র কোরআনে ও হাদিসে ‘শবে বরাত’ শব্দটির অস্তিত্ব নেই। কারণ এটি ফারসি ভাষার শব্দ। ‘শব’ শব্দটি ফারসি, অর্থ রাত। আর ‘বারাআত’ শব্দের অর্থ হলো- নাজাত, নিষ্কৃতি বা মুক্তি। শবে বরাতকে অনেকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ নামে অভিহিত করেছেন। হাদিস শরিফে একে নিসফে শা’বান বলা হয়। অর্থাৎ হিজরি শা’বান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হয়।
পবিত্র কোরআনে এ রাত্রি নিয়ে কি বলা আছে?

 

 

 

 

কোরআনুল কারিমে এসেছে, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয়ই আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয়ই আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয়ই আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি।’ (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-৫)।

 

 

মুফাসসিরিনগণ বলেন:

এখানে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনি বলে শাবান মাসে পূর্ণিমা রাতকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, রুহুল মাআনি ও রুহুল বায়ান)। হজরত ইকরিমা (রা.) প্রমুখ কয়েকজন তাফসিরবিদ থেকে বর্ণিত আছে, সুরা দুখান–এর দ্বিতীয় আয়াতে বরকতের রাত বলে শবে বরাতকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরিফুল কোরআন)।

 

 

 

 

 

 

 

শবে বরাতের ফজিলত প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে আছে, ‘হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধশা’বানের রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন। ’ (ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, ইবনে মাজাহ: ১৩৯০, রাজিন: ২০৪৮; ইবনে খুজাইমা, কিতাবুত তাওহিদ, পৃষ্ঠা: ১৩৬, মুসনাদে আহমদ, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১৭৬)।

 

 

 

হজরত আয়শা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সিজদা করলেন যে আমার ধারণা হলো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তাঁর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল; তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ করে বললেন, “হে আয়শা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে?” আমি উত্তরে বললাম, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.), আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না।’

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নবীজি (সা.) বললেন, ‘তুমি কি জানো এটা কোন রাত?’ আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলই ভালো জানেন। ’ তখন নবীজি (সা.) বললেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। ’ (শুআবুল ইমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৮২)।

 

 

 

তাই এ রাতে বিশেষ বরকত হাসিলের মানসে মুসলিম সম্প্রদায় নফল নামাজ আদায় ও কোরআন তিলাওয়াত, ইস্তেগফার, ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আসকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়ায় মশগুল থাকেন।

 

 

 

 

 

 

বাংলাদেশে এ রাত উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি মসজিদে ওয়াজ মাহফিল, জিকির-আসকারের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন আলোচনা এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

 

 

শবে বরাত পালন শেষে পরদিন সরকারি ছুটি দেওয়া হয়। সংবাদপত্রও বন্ধ থাকে। এ রাতের তাৎপর্য তুলে ধরে রেডিও-টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে। সংবাদপত্র প্রকাশ করে বিশেষ ক্রোড়পত্র।

 

 

 

 

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়