দৃষ্টি নিউজ:
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আমলাতন্ত্রটা জনগণের সাথে দুরত্ব বজায় রেখে চলতো। অথচ সরকারি সকল কর্মকর্তা জনগণের সেবক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। সেই সেবাটা যেন তারা জনগনকে দেন এবং জনগনের পাশে দাড়িয়ে সেটা দেন। কোন প্রভুত্বমূলক জায়গা থেকে নয়। দূরত্বটা যাতে কমিয়ে আনা যায়- সেজন্য সকল মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং জনগনের জন্য আমরা কাজ করছি। যাতে কেউ বলতে না পারে কোন সরকারি কর্মকর্তাদের পাওয়া যায় না।
বুধবার বিকেলে টাঙ্গাইলের মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন বিকালে তিনি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মওলানা ভাসানী ও নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায়ও তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আসার পর দেখলাম- যে কয়টা স্টেডিয়াম আছে এগুলোর সবই যথার্থ সংস্কার কিংবা যথার্থ ব্যবহার যোগ্যতা নাই। সে জায়গা থেকে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে এগুলোকে সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহারে যোগ্য করে গড়ে তোলা। ইতোমধ্যে বিসিবি আমাদের একটি তালিকা দিয়েছে। সারাদেশে ৯টি স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক পর্যায়ের, যেগুলোতে কখনো কখনো আন্তর্জাতিক খেলা হতো। কয়েকটা আছে ২৬ বছর আগে খেলা হয়েছে- তারপর আর ব্যবহার করা হয়নি। সেগুলোকে সংস্কারের মাধ্যমে প্রথমে ব্যবহার যোগ্য করা।
একই সাথে আমরা বাফুফেকে নির্দশনা দিয়েছি আপনারাও একটি তালিকা দেন ফুটবল স্টেডিয়ামগুলোকে যেন রিভাইভ করতে পারি। খেলার উপযুক্ত করতে পারি। আপনারা জানেন জেলা ক্রীড়া সংস্থা, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলো বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলো পূর্ণগঠন চলছে। আমরা বলেছি- জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে একদম প্রান্তিক পর্যায়ে খেলাধুলাকে পৌঁছে দেওয়া। আবার আগের টুর্নামেণ্ট যেন আবার পরিচালিত হয় এবং তরুণ-যুবকরা যাতে এর মধ্যে অংশগ্রহণ করতে পারে।
আপনারা জানেন যে, আমাদের প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে একটা ইউস ফ্যাস্টিভ্যাল করতে যাচ্ছি। বিবিএএল খেলার যে সময়টা কেন্দ্র করে শুধু স্টেডিয়ামে না স্টেডিয়ামের বাইরেও সারাদেশে ইউস ফ্যস্টিভ্যাল করার একটা পরিকল্পনা আমাদের আছে এবং সকল যুবক-তরুণদেরকে একসাথে সংযুক্ত হওয়ার আহ্বান থাকবে।
এরআগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ ভাসানীর মাজার জিয়ারত করেন। মাজার জিয়ারত শেষে উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেন, জনগনের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের নির্বাচিত সরকার। জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছি আমরা। জনগণের পক্ষের এবং এই দীর্ঘ লড়াইয়ে যারা স্বপক্ষে আছে তাদেরকে নিয়েই আমাদের এই সরকার গঠন করার পরিকল্পনা এবং সরকার ঐভাবেই চলমান আছে।
নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে- যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা জনগণের আকাঙ্খার পক্ষেই থাকবেন। আপনারা এই সরকারের উপর আস্থা রাখতে পারেন। এই সরকার জনগণের আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করবেন এবং যারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন তারাও এই আকাঙ্খা বাস্তবায়নের মধ্যে সামিল হবেন।
কোন রকম সংশয়-সন্দেহ থাকলে আমরা মনে করি এটা কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করা হবে যে তারা জনগনের পক্ষে আছেন। পরে উপদেষ্ঠাদ্বয় ভাসানীর গড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন শেষে আলোচনা সভায় যোগ দেন।
মওলানা ভাসানী পাঠ চক্রের আয়োজনে জাতীয় নাগরিক কমিটি টাঙ্গাইল জেলা শাখার সহযোগিতায় ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কবি, ভাবুক ও রাষ্ট্র চিন্তক ফরহাদ মজহার।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য(ভিসি) অধ্যাপক ডক্টর মো. আনোয়ারুল আজীঢম আখন্দ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, ভাসানী ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানু প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।