চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর হাটের জায়গা দখল করে নির্মিত উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় সহ জবরদখলকৃত সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি করেছে ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন করেছে এনায়েতপুর হাটের ইজারাদার আনিছুর রহমান।
জানা যায়, তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ এনায়েতপুর থানা সদরে ৩১.৩৮ একর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত এনায়েতপুর হাট। যমুনার চরাঞ্চলে উৎপাদিত কৃষি ও গবাদি পশু এবং কাপড় সহ তাঁত শিল্পের সকল উপকরণ এ হাটে বেঁচাকেনা হয়। এখানে প্রতি শুক্রবার সাপ্তাহিক হাটবার। এছাড়া রোববার ও বুধবার বৃহৎ কাপড়ের হাট বসে। যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল সহ ভারতের ক্রেতারাও এক সময় আসতেন। গত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে এনায়েতপুর থানার সামনে হাটের প্রাণকেন্দ্রে জায়গা জবরদখল করে আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করা হয়।
এছাড়া আ’লীগের প্রভাবশালী দলীয় নেতারা নামে-বেনামে অবৈধভাবে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এতে হাটের পেরিফেরিভুক্ত প্রায় ২১.৩৮ একর হাটের জায়গা অবৈধভাবে তারা জবরদখল করে নেয়। একারণে ঐতিহ্যবাহী এনায়েতপুর হাটের বেঁচা-বিক্রি বা ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। হাটে ক্রেতা এবং বিক্রেতার সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকে। ফলে ধ্বংসের পথে এ হাটের ঐতিহ্য।
এনায়েতপুর কাপড় বিক্রেতা আহসান হাবীব, জহির শেখ ও জামাল উদ্দিন জানান, হাটের মধ্যে দলীয় কার্যালয় হওয়ায় বেঁচাবিক্রির সুষ্ঠ পরিবেশ নেই। নিরাপত্তা ও হাটের উন্নয়নে শেড, ড্রেন নির্মাণ সহ নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনে ব্যবস্থা নিশ্চিত ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানান তারা।
এদিকে জুলাই আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর এনায়েতপুর হাটের জায়গা উদ্ধারে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে তিনবার আবেদন করেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে দাবি করেন ইজারাদার আনিছুর রহমান।
তিনি অভিযোগ করে জানান, আওয়াামী লীগের অফিস এখনো বিদ্যমান থাকায় ফ্যাসিস্টের দোসরদের আনাগোনা করছে। এতে হাটের নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে। বিক্রেতা ও বেপারীরা হাটে আসছে না- এ কারণে সঠিকভাবে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না, ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আনিছুর রহমান আরও অভিযোগ করেন, এনায়েতপুর থেকে পাঁচিল আঞ্চলিক সড়কের সংস্কারের সুযোগে বিভিন্ন জায়গা আবার নতুন করে একশ্রেণির প্রভাবশালী হাটের জায়গা জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এনায়েতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় সহ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং দখলমুক্ত করার দাবি জানাই।
