আজ- বৃহস্পতিবার | ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫
৯ মাঘ, ১৪৩১ | সন্ধ্যা ৬:৫৯
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫
৯ মাঘ, ১৪৩১
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯ মাঘ, ১৪৩১

কালিহাতীতে নিখোঁজের সাড়ে তিন মাস পর যুবকের সার্ট-গেঞ্জি উদ্ধার ॥ গ্রেপ্তার ১

দৃষ্টি নিউজ:

Kalihati.টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার রামপুর সাত বিল থেকে মঙ্গলবার(২৫ এপ্রিল) দুপুরে সাড়ে তিন মাস আগে নিখোঁজ হওয়া যুবক শফিকুল ইসলাম সলিডের পড়নের সার্ট-গেঞ্জি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে, মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, কালিহাতী উপজেলার বল্লা ইউনিয়নের কুকড়াইল গ্রামের মৃত চান মামুদের ছেলে শফিকুল ইসলাম সলিড(৩৫) তাঁত শ্রমিকের কাজ করতেন। পাশাপাশি থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতে গিয়ে তিনি স্থানীয় অনেকের রোষানলে পড়েন। গত ৯ জানুয়ারি তিনি বোনের বাড়ি একই ইউনিয়নের বলদকুড়া গ্রামে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এ বিষয়ে গত ১৭ জানুয়ারি তার বড় ভাই একই উপজেলার পলাশতলী গ্রামের রমজান আলী বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি নং-৭০৯) করেন। পরে গত ৪ এপ্রিল তিনি বাদী হয়ে টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট(কালিহাতী) আমলী আদালতে দন্ড বিধির ৩৬৪/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি কালিহাতী থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে গ্রহন করার আদেশ দেন। কালিহাতী থানা পুলিশ মামলাটি রোববার(২৩ এপ্রিল) রাতে এফআইআর হিসেবে গ্রহন করে এবং মামলাটি এসআই সাইদুল ইসলামকে তদন্তের নির্দেশ দেন। সোমবার(২৪ এপ্রিল) সকালে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ কুকড়াইল গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে রায়হান মিয়াকে(২৫) আটক করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান মিয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। পুলিশের কাছে কার্যবিধির ১৬১ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে রায়হান মিয়া নিখোঁজ শফিকুল ইসলাম সলিডকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেন। এ সময় তিনি ঘটনার সাথে জড়িত থাকা আরো পাঁচজনের নাম প্রকাশ করেন।
তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মো. আখেরুজ্জামান, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইদুল ইসলাম সহ পুলিশের দুই টীম মঙ্গলবার(২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টা বাসাইলের নোন্দা বিল ও কালিহাতীর সাত বিলে অভিযান চালান। অভিযানে সাত বিলের রামপুর পুরাতন বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে নিখোঁজ শফিকুল ইসলাম সলিডের পড়নের খয়েরি রঙের চেক সার্ট ও একটি সাদা স্যান্ডেল গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়।
মামলার বাদী রমজান আলী জানান, নিখোঁজের সময়ই পুলিশকে ঘটনা জানানো হয়েছিল কিন্তু পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। নিখোঁজের আট দিন পর পুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরি নথিভুক্ত করে ঘটনাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে আদালতে মামলা দায়ের করলে পুলিশ তৎপর হয়। তিনি জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। তিনি ভাই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইদুল ইসলাম জানান, মামলাটির দায়িত্ব পেয়ে তিনি দ্রুত তদন্ত শুরু করেন।এক পর্যায়ে রায়হান মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে শফিকুল ইসলাম সলিডকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে ভিকটিমের পড়নের সার্ট ও গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত সার্ট ও গেঞ্জি শফিকুল ইসলাম সলিডের বলে তার বড় ভাই রমজান আলী ও বোন রূপসী বেগম সনাক্ত করেছেন। তদন্তের স্বার্থে জবানবন্দিতে পাওয়া নাম প্রকাশ করা যাচ্ছেনা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মো. আখেরুজ্জামান জানান, রামপুর-কুকড়াইল এলাকার বেশকিছু মাদক বিক্রেতা গ্রেপ্তার হয়ে কেউ জেল-হাজতে আবার কেউ জামিনে রয়েছে। তারা মনে করতো শফিকুল ইসলাম সলিড তথ্য দিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করিয়েছে। এ নিয়ে তাদের সাথে দ্বন্দ্ব ছিল। আদালত থেকে মামলাটি হাতে পেয়ে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পর নিখোঁজ যুবক সলিডের জামা-গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়েছে। দ্রুতই ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি জানান, প্রায় দুই মাস আগে বাসাইলের নোন্দা বিল থেকে ফুলকী ইউনিয়নের সদস্য ফজলুল হকের মাধ্যমে একটি অজ্ঞাত লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। ওই কঙ্কালটি নিখোঁজ শফিকুল ইসলাম সলিডের হতে পারে বলে তাদের সন্দেহ। কিন্তু বাসাইল থানা পুলিশ এ বিষয়ে কোন সহযোগিতা করছেনা।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়