আজ- মঙ্গলবার | ১১ নভেম্বর, ২০২৫
২৬ কার্তিক, ১৪৩২ | রাত ১১:২২
১১ নভেম্বর, ২০২৫
২৬ কার্তিক, ১৪৩২
১১ নভেম্বর, ২০২৫, ২৬ কার্তিক, ১৪৩২

ঘাটাইলে বনের ভেতর স’মিলের ছড়াছড়ি!

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সংরক্ষিত বন এলাকার ভেতরে স’মিলের(করাতকল) ছড়াছড়ি। বনের ভেতর গড়ে ওঠা দেড় শতাধিক অবৈধ স’মিলগুলো(করাতকল) বন বিভাগের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাঠ ব্যবসায়ী চক্রের সহযোগিতায় নিয়মিত মাসোয়ারায় পরিচালিত হচ্ছে। ফলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে অবৈধ স’মিল মালিক, কাঠ ব্যবসায়ী ও কাঠ চোররা।

স্থানীয় বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া রেঞ্জের আওতায় বটতলী, ঝড়কা, চৌরাসা, দেওপাড়া, ধলাপাড়া ও সাগরদীঘি নামে ছয়টি বনবিট রয়েছে। এই রেঞ্জের আওতাধীন বন বিভাগের ভূমির পরিমাণ ৮৮.৪৫ বর্গকিলোমিটার। এলাকার ৪৯টি মৌজায় বন বিভাগের সংরক্ষিত বনভূমির পরিমাণ ২৯১০৬.৭৬ একর। এ বিশাল বনভূমিতে রয়েছে শাল, গজারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামাজিক বনায়নের গাছ।

সূত্রমতে, বন আইনে সংরক্ষিত বন এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে স’মিল বা করাতকল স্থাপনের বিধি-নিষেধ রয়েছে। কিন্তু তা অমান্য করে সংরক্ষিত শাল-গজারি বন ঘেঁষে এসব অবৈধ স’মিল বা করাতকল স্থাপন করা হয়েছে। স’মিলগুলোতে দিনরাত অবাধে শাল, গজারিসহ সামাজিক বনের কাঠ চিরানো হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে এ স’মিলগুলো চলানো হলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোনো অভিযান না থাকায় বন এলাকা ধীরে ধীরে বিরানভূমিতে পরিণত হচ্ছে।

ঘাটাইল উপজেলার সংরক্ষিত বন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বন বিভাগের ধলাপাড়া রেঞ্জের ছয়টি বিটের আওতায় ১০০টির বেশি অবৈধ স’মিল বা করাতকল রয়েছে। তবে ঘাটাইল পৌরসভার স’মিল মালিক সমিতির দাবি, অবৈধ স’মিলের সংখ্যা দেড় শতাধিক। সংরক্ষিত বন এলাকার ধলাপাড়া, সাগরদীঘি, দেওপাড়া, গারোবাজার, মাকড়াই, ছনখোলা, বটতলা, নলমা, কুশারিয়া, পেচারআটা, মাইধারচালা, কাজলা, দেওজানা, চাপড়ী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকপুর, বোয়ালীহাটবাড়ী, শহরগোপিনপুর, জোড়দীঘি, মুরাইদ, লক্ষ্মীন্দর, সিংহেরচালা, শিবেরপাড়া, মালেঙ্গা, মোমিনপুর, বগা ও ফকিরচালা এলাকায় এসব অবৈধ স’মিল স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, বনের ভেতরে স্থাপিত বেশির ভাগ স’মিলের মালিক কাঠ ব্যবসায়ী। তাদের সঙ্গে কাঠ চোরদের সুসম্পর্ক রয়েছে। স’মিল মালিক ও কাঠ চোররা মিলেমিশে সংরক্ষিত বনের গাছ সাবাড় করলেও এ ব্যাপারে বন বিভাগ কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের কোনো তৎপরতা নেই।

এ বিষয়ে ঘাটাইল পৌর করাতকল মালিক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আ. হালিম বলেন, ঘাটাইল উপজেলায় দেড় শতাধিক স’মিল বা করাতকল লাইসেন্সবিহীন। এ ব্যাপারে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তারা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।

এ বিষয়ে ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা এসএম হাবিবুল্লাহ বলেন, ঘাটাইলের ধলাপাড়া রেঞ্জের আওতায় ১০১টি স’মিল রয়েছে। এর একটি তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে অবৈধ স’মিলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম জানান, শিগগিরই বন বিভাগের ভেতরে স্থাপিত অবৈধ স’মিল বা করাতকল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, গত আগস্ট মাসের মাসিক সভায় স্থানীয় এমপি’র উপস্থিতিতে অবৈধ স’মিল উচ্ছেদের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আশা করছি, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে কর্তৃপক্ষ অতিদ্রুত সংরক্ষিত বন এলাকায় স্থাপিত স’মিল বা করাতকল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করবে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়