দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইল পৌরসভার বহুল আলোচিত-সমালোচিত বেড়াডোমা সেতু এ মাসেই খুলে দেওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটি নির্মাণে চার বছর কেটে গেলেও খুলে দেওয়ার সংবাদে উদ্বেলিত সুবিধাভোগীরা।
নির্মাণের মাঝে দেবে যাওয়ার মত দুর্ঘটনার পরও কাঙ্খিত সেতু নির্মাণের সমাপ্তিতে স্বপ্নের দিন গুণছে জেলার পশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষ। সেতুটি নির্মাণের ফলে এতদাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হওয়ার পাশাপাশি খুলবে ব্যবসায়িক দ্বার। এর সুফল ভোগ করবে জেলার পশ্চিমাঞ্চলের চার ইউনিয়নের পাঁচ লক্ষাধিক মানুষসহ পাশের অঞ্চলের জনসাধারণ।
জানা যায়, টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (টিপিআইআইপি) আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে শহরের বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৪১.৭০ মিটার দীর্ঘ এই আর্চসেতু নির্মাণ কাজের জন্য ব্রিকস্ অ্যান্ড ব্রিজেস লিমিটেড এবং দি নির্মিতি (জেভি) নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর চুক্তিপত্র হয়।
২০২০ সালের ১২ নভেম্বর তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৮৪১ টাকা ব্যয়ে এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। বর্ধিত সময় অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর কাজ সমাপ্তির তারিখ নির্ধারণ করা হয়। নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর চারটি বিলের মাধ্যমে ঠিকাদারকে দুই কোটি ৮০ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭৬ টাকা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৬ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্মাণাধীন সেতুটি দেবে যায়।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, সেন্টারিং খোলাসহ ঘষা-মাজা আর সাজসজ্জার অপেক্ষায় রয়েছে বেড়াডোমা সেতু। এ সড়কে চলাচলকারী সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক মোস্তফা জানান, প্রায় চার বছর যাবৎ তারা চরম কষ্টভোগ করছেন। সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলে তাদের সেই কষ্ট দূর হবে।
বাসাখানপুর গ্রামের গৃহিনী রোজী জানান, সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে তারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শহরে বাচ্চার স্কুলে যাতায়াতসহ মার্কেট ও বাজারে যাতায়াতের খরচ দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে। বেশি সময় ব্যয় হওয়া ও চলাচলে নানা ধরণের সমস্যা রয়েছে। সেতুটি নির্মাণের কাজটি শেষ হওয়ায় তারা স্বস্তি পাচ্ছেন। দ্রুত উদ্বোধন হলেই তাদের দুর্ভোগ কাটবে।
স্থানীয় হেদায়েত আলী খানসুর শোভা জানান, পশ্চিম টাঙ্গাইলবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের ফসল বেড়াডোমা সেতু। সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলে পশ্চিমের কাকুয়া, হুগড়া, বাঘিল ও দাইন্যা ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের দুর্ভোগ কাটবে। শহরতলীতে দ্রুত যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি ওই অঞ্চলের কৃষিপণ্য শহরের বাজারগুলোতে এনে বিক্রির সুযোগ পাবেন কৃষকরা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম খান জামিল জানান, সেতুর অবকাঠামোগত নির্মাণ শেষ। সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে সেন্টারিং খোলাসহ ঘষা-মাজা এবং সাজসজ্জার কাজও শেষ হবে। নভেম্বর মাসের মধ্যেই সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান জানান, সেতুর সাটার খোলা, ওয়ারিংসহ কিছু সাজ-সজ্জার কাজ বাকি রয়েছে। নভেম্বর মাসেই সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোন কারণে সম্ভব না হলে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চালু করা হবে।