দৃষ্টি ডেস্ক:
দেশের চামড়া শিল্পের সুতিকাগার রাজধানীর হাজারীবাগ। হাজারীবাগের ট্যানারি এলাকায় ২০৫টি ট্যানারি প্রায় ৬০ একর আয়তনের জায়গায় গাদাগাদি করে চালানো হচ্ছিল। এক পর্যায়ে তা পরিবেশের জন্য মারাত্নক হুমকি হয়ে দেখা দেয়। অবশেষে দেশের অন্যতম বৃহত্তর এ শিল্প কারখানাগুলোকে সাভারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরমধ্যে সাভারে জমি পেয়েছে ১৫৫টি আর ৫০টি জমি পায়নি। আসুন দেখে নেয়া যাক ট্যানারি শিল্পের আদ্যপান্ত,-
১৯৫১ সালের ৩ অক্টোবর ভূমি অধিগ্রহণ করে নারায়ণগঞ্জ থেকে চামড়াশিল্পকে হাজারীবাগে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৮৬ সালে ১৭৬ ট্যানারিসহ ৯০৩টি কারখানাকে দূষণরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। ২০০১ সালে পরিবেশদূষণকারী সব শিল্পকারখানাকে দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ২০০৩ সালে সাভারে চামড়া শিল্পনগর প্রকল্প শুরু, ব্যয় ধরা হয় ১৭৬ কোটি টাকা। ২০০৭ সালে ১৫৫টি ট্যানারিকে সাভারে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ট্যানারি স্থানান্তর শেষ করার ঘোষণা দেয় শিল্পমন্ত্রণালয়। ২০০৯ সালের ২৩ জুন এক আদেশে ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ট্যানারি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই বছরের ৪ অক্টোবর বুড়িগঙ্গা নদীকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে সরকার। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শিল্প মন্ত্রণালয় ২ বছর সময় বাড়ানোর আবেদন করে হাইকোর্ট সর্বশেষ ২০১০ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করেন। ২০১১ সালের জুনে পরিবেশমন্ত্রী সংসদে জানান ট্যানারি সরানোর কাজ ২০১২ সালের মধ্যে শেষ হবে। ২০১৪ সালে সাভারে চামড়াশিল্প নগরে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ শুরু করা হয়। ট্যানারি মালিকরাও কারখানা নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
২০১৬সালের ১০ জানুয়ারি হাজারীবাগ ছাড়তে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন শিল্পমন্ত্রী। একই বছরের ১ এপ্রিল আবারও ৭ দিন সময় দেওয়া হয়। ১৮ জুলাই প্রতিদিন থাকার জন্য ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ওই বছরের ১৬ অক্টোবর শিল্পমন্ত্রী ঘোষণা দেন ডিসেম্বরের মধ্যে না সরলে গ্যাস-বিদ্যুতের
সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি সাভারে যেতে এক মাস সময় বাড়িয়ে দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়, ৬ মার্চ হাজারীবাগের সব ট্যানারি বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের। ১২ মার্চ ট্যানারি মালিকদের আপিল খারিজ করা হয়। ২২ মার্চ হাইকোর্টের আদেশ সংশোধনের জন্য আলাদা আবেদন করেন ট্যানারি মালিকেরা। ২৯ মার্চ সংশোধনের আবেদন খারিজ করে আদালত। ৩০ মার্চ ট্যানারি বন্ধ করে এলে মালিকদের জরিমানার বিষয়ে বিবেচনার আশ্বাস দেন আপিল বিভাগ। ৮ এপ্রিল হাজারীবাগে থাকা ট্যানারির সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন শুরু করা হয়।