মেয়ে সুমাইয়া আক্তার অরিনকে হত্যা ও নিজের আত্মহননের জন্য খুলনার বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান ডা. অশোক কুমার পালকে দায়ী করেছেন মোস্তফা কামাল।
আত্মহননের আগে লিখে যাওয়া চিরকুট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। আত্মহননের পর মোস্তফা কামালের বাসা থেকে ওই চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ।
খুলনার পরমাণু শক্তি কমিশনের হিসাবরক্ষক মোস্তফা কামাল চিরকুটে লিখে গেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য ইনমাস (ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সেস) খুলনার পরিচালক ডা. অশোক কুমার পাল দায়ী। আমি অসুস্থ হওয়ায় গেস্টহাউসের নিচতলায় বসে অফিস করতে চেয়েছিলাম। এতে তিনি আমার সঙ্গে প্রচণ্ড খারাপ আচরণ করেন। ফলে আমি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি। তাই আমি এ পথ গ্রহণ করলাম।’ চিরকুটের নিচে তারিখ ৫-১-১৬, সময় রাত ১০টা উল্লেখ রয়েছে।
মোস্তফা কামালের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার অভিযোগ করেন, গত ৬ ডিসেম্বর তার স্বামীর কোমরে অপারেশন করা হয়। রোববার তিনি অফিসে যোগদান করেন। তিনি চারতলায় অফিস করতেন। ওপরে ওঠানামায় তার কষ্ট হতো। এ জন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে চারতলা থেকে তাকে নিচতলায় দেওয়ার অনুরোধ করেন। এতে ওই কর্মকর্তা তার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন। এ নিয়ে তিনি মানসিক কষ্টে ছিলেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইনমাসের খুলনার পরমাণু শক্তি কমিশনের পরিচালক ডা. অশোক কুমার পাল বলেন, হিসাবরক্ষক মোস্তফা কামাল চিকিৎসা শেষে গত ৩ জানুয়ারি অফিসে যোগদান করেন। ওই দিনই তিনি শারীরিক অসুবিধার জন্য নিচতলায় অফিস করার কথা বলেন। কিন্তু নিচতলায় কোনো রুম খালি না থাকায় একটি মেশিন রুম খালি করে তার বসার ব্যবস্থা করা হয়। বুধবার থেকেই সেখানে তার বসার কথা ছিল। তার সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, হতাশা থেকে মোস্তফা কামাল এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে চিরকুটের বিষয় ছাড়াও অন্য কোনো কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর আহসান আহমেদ রোডের ৮ নম্বর বাড়ির নিচতলা থেকে মোস্তফা কামাল (৫১) ও তার প্রতিবন্ধী মেয়ে সুমাইয়া আক্তার অরিনের (১৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মোস্তফা কামালের লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল এবং তার মেয়ে অরিনের লাশ বিছানায় শোয়ানো অবস্থায় ছিল।