দৃষ্টি নিউজ:
এক হাতে তাঁর বাঁশের বাঁশরী, আরেক হাতে রণতূর্জ। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী, গানের বুলবুল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার(২৫ মে)। বরাবরের মতোই এদিন সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির কবরে যাবেন তার অগণিত অনুরাগী। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার ফুলে ফুলে ঢেকে দেবেন তার অন্তিম শয্যা।
সারাদেশে আনন্দঘন উৎসবের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হবে নজরুলজয়ন্তী। কবি সারাজীবন তার ক্ষুরধার লেখনীতে তুলে ধরেছেন সমাজের শোষণ-বঞ্চনার কথা। সোচ্চার হয়েছেন কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা ও কূপমন্ডূকতার বিরুদ্ধে। নির্ভীক চিত্তে গেয়েছেন মানবতা ও সাম্যের জয়গান। দারিদ্র্যের কশাঘাত সহ্য করেছেন, ভোগ করেছেন কারা নির্যাতন, নিপীড়ন। কিন্তু ব্যক্তিগত লোভ-লাভ-খ্যাতির মোহের কাছে কখনো আত্ম-বিক্রি করেননি। কবিতায় স্বতন্ত্র ভাষারীতি ও প্রচুর আরবি-ফার্সি শব্দ ব্যবহার করে ভিন্ন আঙ্গিক সংযোজিত করেছিলেন। সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যকে।
অন্যদিকে মানবহৃদয়ের সুকুমার অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে অজস্র গানে। উত্তর ভারতীয় রাগসংগীতের দৃঢ়ভিত্তির ওপর রচনা করেছিলেন আধুনিক বাংলা গানের সৌধ। প্রবর্তন করেছিলেন বাংলা গজল। বাংলা গানকে তিনি দিয়েছেন নতুন মাত্রা। মানুষকে তিনি জাগিয়েছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে, শোষণের শৃঙ্খল ভাঙার আন্দোলনে। এখানেই তিনি সমকালের দাবি মিটিয়েও চিরকালীন।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম। পিতা কাজী ফকির আহমেদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। শৈশব থেকেই অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। জীবিকার দায়ে ঠেকেছিলেন শৈশবেই। লেটো দলের বাদক, রেল গার্ডের খানসামা, রুটির দোকানের শ্রমিক- এভাবেই পেরিয়ে গেছে তার শৈশব-কৈশোর। পরে কাজ করেছেন সৈনিক হিসেবে। সাংবাদিকতা করেছেন। কাজ করেছেন এইচএমভি ও কলকাতা বেতারে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে পথে নেমেছেন। পাশাপাশি সাহিত্য সাধনা তো ছিলই। শাসকের কোপানলে পড়েছেন, কারারুদ্ধ হয়েছেন, কিন্তু নত হয়নি নজরুলের উচ্চশির।
বাণী : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা কবির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তার রচনা কবিতা ও গান আমাদের মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণা জুগিয়েছে। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কবির রচনা এখনো আমাদের প্রেরণা জোগায়।