আজ- বুধবার | ১৮ জুন, ২০২৫
৪ আষাঢ়, ১৪৩২ | সকাল ১০:৪৩
১৮ জুন, ২০২৫
৪ আষাঢ়, ১৪৩২
১৮ জুন, ২০২৫, ৪ আষাঢ়, ১৪৩২

জুলাই বিপ্লবের পর ‘লাপাত্তা’ শিক্ষকরা :: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সরাসরি রাজনীতিতে যুক্তথাকা বেশ কিছু শিক্ষক চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।

অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের ঘোষণায় প্রায় তিন মাস ধরে যথারীতি বিদ্যালয়ে পাঠদান চলমান থাকলেও আত্মগোপনে থাকা শিক্ষকরা এখনও বিদ্যালয়ে যোগ দেয়নি। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষাগ্রহণ বঞ্চিত ও শ্রেণি সমাপনী পরীক্ষার সিলেবাস সমাপ্তের অনিশ্চয়তায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা।


অনুসন্ধানে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানাগেছে, মধুপুরের প্রাথমিক থেকে কলেজ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন চিত্র বিরাজ করছে। এ উপজেলায় আত্মগোপনে থাকা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের সংখ্যা অন্তত বিশজন। ইতোমধ্যে তাদের অনেকে অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে চিকিৎসা সুযোগের জন্য বর্তমান সভাপতি (সরকার নির্ধারিত) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ছুটির আবেদন করেছেন।


সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সরকারি একটিসহ উপজেলায় ৮টি কলেজ পর্যায়ের (উচ্চমাধ্যমিক) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ৮টির মধ্যে দুটির অধ্যক্ষ সরাসরি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে তারা দু’জন আন্দোলনের বিপরীতে ভূমিকা রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে মধুপুরে তিনটি মামলা হয়েছে। ওইসব মামলার অপরাপর আসামিদের সঙ্গে ওই দুই অধ্যক্ষও আসামি হয়েছেন। তাদের অন্যতম চাপড়ী গণ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম সবুজ একাধিক মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

আউশনারা কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান জুয়েল একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গ্রেপ্তার এড়াতে ওই দুই অধ্যক্ষের সঙ্গে মামলার আসামি হয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন আউশনারা কলেজের প্রভাষক সালেহ আহমেদ, মনিরুজ্জামান মনি, মধুপুর মহিলা কলেজের প্রভাষক খন্দকার লাবু। নাগবাড়ী তালিমুল দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা নোমানুর রহমানও আসামি হয়ে আত্মগোপণে রয়েছেন।

আলোকদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা আবুল কালাম আজাদ আসামি হয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কামরুজ্জামান খান ওরফে শামীম মাস্টার নামে এক শিক্ষক উপজেলায় দায়েরহওয়া তিনটি মামলারই আসামি। তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। তার পরিবারিক সূত্র জানায়, তিনি বেশ অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়েছেন।

ফাজিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিনা প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের হুমকির কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারেন না বলে অভিযোগ করেছেন। চাপের মুখে অসুস্থ না হয়েও তাকে ১৫ দিনের চিকিৎসা ছুটি নিয়ে পাঠদান থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে।


মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুর রহমান জানান, কলেজ ও মাধ্যমিক পর্যায়ের একাধিক শিক্ষকের চিকিৎসা সংক্রান্ত ছুটির আবেদন রয়েছে। এছাড়া ৫ আগস্টের পর যেসব শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আগামি ১০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত ছকে তাদের তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।


মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন জানান, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষকদের একমাত্র পরিচয় তিনি শিক্ষক। তাদের রাজনৈতিক পরিচিতি শোভন নয়। তিনি সবাইকে শিক্ষকতায় ফিরে আসার আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়