- থমথমে শহরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন- তিন আন্দোলনকারী আহত
দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর শহরের বিভিন্নস্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে জেলা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয়। সকাল ১১টার দিকে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের নিরালা মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও তেড়ে আসে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
এসময় ছাত্রলীগের হামলায় তিন জন শিক্ষার্থী আহত হয় বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড় এলাকায় অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এদিন দুপুর ১২টার দিকে স্থানটি ছেড়ে দেয়।
এদিন দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ টাঙ্গাইল শহিদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে একত্রিত হয়। পরে সেখান থেকে বিক্ষেভ মিছিল নিয়ে তারা টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। কিছুক্ষণ পর মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও এমএম আলী সরকারি কলেজের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয়।
এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে গিয়ে সমবেত হয়। এ সময় তারা অল্পকিছু সময় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ ঘটনায় শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক মোড়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অতর্কিত হামলায় তাদের তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা আহত শিক্ষার্থীদের নাম জানাতে পারেন নি।
টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান জানান, শহরে যাতে কোন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় এজন্য নিরালা মোড়ে ছাত্রলীগ শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসচি পালন করে। এসময় কোটা বিরোধীরা আপত্তিকর স্লোগান দিলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হয়। তবে কারও উপর হামলা বা কাউকে ধাওয়া করা হয়নি। পরে এদিন দুপুর ১২টার দিকে অবস্থান কর্মসূচি সমাপ্ত করে স্থানটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার গোলাম সবুর জানান, বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও স্থানীয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছিল। সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোন সমস্যা নেই- এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে জনগণের ক্ষতির কারণ বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে তা আইনগতভাবে প্রতিহত করা হবে।
তিনি জানান, বিশৃঙ্খলা এড়াতে শহরের বিভিন্নস্থানে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।