আজ- মঙ্গলবার | ১১ নভেম্বর, ২০২৫
২৬ কার্তিক, ১৪৩২ | রাত ১১:৪৪
১১ নভেম্বর, ২০২৫
২৬ কার্তিক, ১৪৩২
১১ নভেম্বর, ২০২৫, ২৬ কার্তিক, ১৪৩২

টাঙ্গাইল-ভূঞাপুর সড়কে ব্রিজ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার!

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইল-ভূঞাপুর সড়কে ১০টি ব্রিজ ও একটি কার্লভাট নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সড়ক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কতিপয় ব্যক্তিদের যোগসাজশে এ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলের সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল-ভূঞাপুর সড়কের এলেঙ্গা থেকে চরগাবসারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রাস্তা ২৪ফুট চওড়াকরণ ও উন্নয়নের জন্য ৪৭ কোটি টাকায় দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এ সড়কে ১০টি ব্রিজ ও একটি কার্লভাট নির্মাণের জন্য ৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনটি প্যাকেজে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এই কাজ বাস্তবায়ন করছে। ১০০ কোটি টাকার এ প্রকল্প ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয়েছে এবং আগামি ২০২০ সালের ২০ জুন শেষ হবে।

সরেজমিনে জানা যায়, সড়কের তাঁতিহারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রিজের কাজ চলছে ঢিলেঢালাভাবে। ব্রিজের অ্যাপ্রোচ নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে ভাঙ্গা ব্রিজেরই নষ্ট ইট। এরকম দৃশ্য আরো কয়েকটি ব্রিজের। লুৎফর রহমান মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয় সংলগ্ন কার্লভাটের কাজ শেষ না হতেই চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। কার্লভাটের উত্তর ও দক্ষিণ অ্যাপ্রোচে মাটি না থাকায় যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।

এদিকে, প্রতিটি ভাঙ্গা ব্রিজের পাশে যাতায়াতের জন্য বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়েছে। বিকল্প সড়কগুলো সিডিউল অনুযায়ী তৈরি করা হয়নি। ভাঙ্গা ব্রিজের আবর্জনা দিয়েই তৈরি করা হয়েছে অধিকাংশ বিকল্প সড়ক। ডাইভারসনে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদও করেছিল। সড়কের শ্যামপুর, ফুলতলা, নারান্দিয়া, কাগমারীপাড়া ও শিয়ালকোল বিকল্প সড়ক একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিকল্প সড়কের মাথায় মাটে নেই, একটু পরপরই ছোট-বড় গর্ত। আবার সড়কের উপরেই রাখা হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। রোদ থাকলে বিকল্প সড়ক ধুলায় অন্ধকার হয়। ছিটানো হয়না নিয়মিত পানি। আর বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে। ফলে ছোট বড় যানবাহনগুলো চরম ঝুঁকি নিয়ে ডাইভারশন পারাপার হচ্ছে। ঝাঁকুনি আর ধুলায় পথচারী ও যাতায়াতকারীদের ভোগান্তির চরম আকার ধারণ করেছে।

এ সড়ক দিয়ে কালিহাতী, ঘাটাইল ও ভূঞাপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাফেরা করেন। তারাকান্দি সার কারখানার মালবাহী যান চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন এবং বঙ্গবন্ধু সেনানিবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন।

তাঁতিহারা ব্রিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নবারুল ট্রেডার্স লিমিটেডের প্রকৌশলী তারেক হোসেন বলেন, ব্রিজের উপর সাময়িকভাবে যান চলাচলের জন্য এই সামগ্রীগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কথা তিনি অস্বীকার করেন।

প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল মাহমুদ বলেন, এই ইটগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে সাময়িক চলাচলের জন্যে। তিনি নিম্নমানের ডাইভারসন নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করেন।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল-৪(কালিহাতী) আসনের সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, ‘কয়েকটি ডাইভারসনের অবস্থা খুবই খারাপ। ব্রিজ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলব’।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়