দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির রাজধানী খ্যাত দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইলে শাড়ি ব্যবসায়ী ও ডিজাইনার রঘুনাথ বসাক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ প্রকল্পের বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে শাড়ি তৈরি করেছেন। তার ডিজাইনে দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস সময় নিয়ে শাড়িটি বুনেছেন পাথরাইলের বিষ্ণপুর গ্রামের তাঁত শ্রমিক মো. হুমায়ুন মিয়া।
গ্রাম বাংলার কৃৃষি নির্ভর পরিবারগুলোর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ প্রকল্পটি বেশ গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে। সেই প্রকল্পের বিষয়বস্তু নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাঙালি নারীর ঐহিত্যবাহী পোশাক শাড়ি। শাড়িটিতে স্পষ্ট বিধৃত হয়েছে, ‘কলসি কাঁধে নদীর ঘাট থেকে পানি নিয়ে ফিরছেন গৃহবধূ। পাশের নদীতে নৌকা দিয়ে বাড়ির পথে ফিরছেন মাঝিরা। খোলা মাঠে কৃষিকাজ ফেলে গাছের নীচে বসে বিশ্রাম আর বাঁশি বাজাচ্ছে কৃষক। মাঠ থেকে গরু চড়িয়ে বাড়ি ফিরছে রাখাল।’
শাড়িটি তৈরি সম্পর্কে তাঁত শ্রমিক(কারিগর) মো. হুমায়ুন মিয়া বলেন, অনেক শ্রম দিয়ে শাড়িটি তৈরি করেছি। সাড়ে ১২ হাত দীর্ঘ আর ‘র’ সিল্ক দিয়ে শাড়িটি তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে ৪ মাস। প্রতিদিন শাড়িটির পিছনে শ্রম দিয়েছেন গড়ে ৮ ঘণ্টা। শাড়িটিতে ১০-১৫ টি রংয়ের সিল্ক সুতা ব্যবহার করা হয়েছে। শাড়িটির প্রধান সুতা(তানার সুতা) ছিল ‘টানা সুতা’। তাছাড়া ৪০/২ রেমন সুতাও ব্যবহার করা হয়েছে। শাড়িটিতে প্রধানমন্ত্রীর ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ প্রকল্পের বিষয়টি তুলে ধরতে পারায় কেমন লাগছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি নিজেও ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ প্রকল্পের সদস্য। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার তৈরি শাড়ি পরিধান করেছিলেন। সে সময় তিনি শাড়িটির তৈরিগত মানে খুশি হয়ে আমাকে গণভবনে ডেকে নিজ হাতে এক লাখ টাকা পরস্কার দিয়েছিলেন।
শাড়িটির ডিজাইনার পাথরাইলের যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোং- এর স্বত্বাধিকারী রঘুনাথ বসাক বলেন, এবারের ঈদে অনেক নতুন ডিজাইনের শাড়ি আমরা তৈরি করেছি। তারমধ্যে এই শাড়িটি একটি। শাড়ি তৈরিতে নতুনত্ব আমাদের সব সময়ই সাড়া দেয়। প্রতিবছর ঈদ-পূজা’র উৎসবগুলোতে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি যত অভিনবত্ব দিয়ে থাকে, তেমন নতুনত্ব অন্য কোন শাড়ি দিতে পারে না। এই শাড়িটি তৈরি করা হয়েছে শুধু বিক্রির উদ্দেশে নয়। আমাদের তাঁত শিল্পীদের শিল্পকর্মগুলো মানুষের মধ্যে বহিঃপ্রকাশ ঘটুক, মানুষ শাড়ি পড়ার পাশাপাশি একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে আরও উৎসাহিত হোক- এসব কারণেই এমন শাড়ি তৈরি করা। শাড়ি তৈরির সময় আমরা গ্রাম বাংলার মানুষের আগ্রহ কোন দিকে, মানুষ কোনটা ব্যবহারে বেশি আনন্দ পায়- এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমরা নতুন শাড়িতে সব সময় নতুন ভাবে রূপ দেই। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে যে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প চালু করেছেন ওই প্রকল্পে অনুপ্রাণিত হয়েই আমরা শাড়িটির ডিজাইন করে তৈরি করেছি। শাড়িটি তৈরিতে প্রায় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ডিজাইন করা একটি শাড়ি পরিধান করেছিলেন। তখন তিনি ডিজাইনে খুশি হয়ে আমাকে ধন্যবাদও দিয়েছিলেন। এবারের শাড়িটি তৈরিতে সেই কৃতজ্ঞতাবোধও আমার মধ্যে কাজ করেছে।