দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের মঙ্গলহোড় গ্রামে ক্ষুধার জ¦ালা সহ্য করতে না পেরে বৃদ্ধ বাবাকে হত্যার পর মরদেহ টয়লেটের কূপে ফেলে দিয়েছেন ছেলে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ বাড়ির টয়লেটের কূপ থেকে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শামসুল আলম(৭৫) পেশায় দলিল লেখক ছিলেন।
জানা যায়, গত শুক্রবার(২০ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে দলিল লেখক শামসুল আলম নিখোঁজ হন। এদিন থেকে তার একমাত্র ছেলে সাত্তার মিয়ারও(৪০) সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে স্থানীয়রা মঙ্গলবার ভোরে সাত্তারকে আটক করার পর তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাবার মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়।
নিহতের ভাতিজা লেবু মিয়া জানান, তার চাচা শামসুল আলম একজন বৃদ্ধ মানুষ। তিনি দলিল লেখক ছিলেন। তার চাচাকে শুক্রবার রাত থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। একমাত্র চাচাতো ভাই সাত্তারও উধাও ছিলেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর চাচাকে না পেয়ে তারা গত সোমবার(২৩ সেপ্টেম্বর) দেলদুয়ার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) দায়ের করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করে। এদিন রাতে সাত্তারের মোবাইল ফোন খোলা পেয়ে তারা ফোনে সাত্তারকে বাড়ি আসতে বলেন। রাতেই সাত্তার বাড়ি এলে প্রতিবেশিরা তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে নিজেদের টয়লেটের কূপের ভেতরে উল্টো করে রাখা তার চাচার মরদেহ পাওয়া যায়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে অভিযুক্ত সাত্তারকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত ছেলে সাত্তার মিয়া জানান, তার বাবা শামসুল আলম টাকা পয়সা না দিয়ে তার পরিবারকে আলাদা করে দেন। তিনি ঠিকমতো সংসার চালাতে পারছিলেন না। ক্ষুধায় প্রচণ্ড কাতর হয়ে শনিবার(২১ সেপ্টেম্বর) রাত ২টার দিকে তিনি বাবার ঘরে যান। বাবা তাকে জিজ্ঞাসা করেন- ঘরে কেন এসেছিস? কথা প্রসঙ্গে তর্কাতর্কি হলে তিনি বাবার ওপরে উঠে বসেন এবং হাত দিয়ে গলা চেপে ধরেন। অনেক ধস্তাধস্তির পর একটি ওড়না দিয়ে তিনি বাবার গলা বেঁধে ফেলেন। এতে তার বাবা শামসুল আলম মারা যান। মৃত্যু নিশ্চিত হলে বাবার মরদেহ বাড়ির টয়লেটের কূপের মধ্যে ফেলে দিয়ে তিনি পালিয়ে যান।
দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সোহেব খান জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সাত্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তার বাবাকে গলা টিপে হত্যার পর মরদেহ টয়লেটের কূপের ভেতর ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।