আজ- শনিবার | ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫
১১ মাঘ, ১৪৩১ | সকাল ৬:২৭
২৫ জানুয়ারি, ২০২৫
১১ মাঘ, ১৪৩১
২৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১ মাঘ, ১৪৩১

ধর্ষণে গর্ভবতী প্রতিবন্ধী হাসপাতালে :: পুলিশের ভূমিকায় হতাশ বিচার প্রার্থী পরিবার

দৃষ্টি নিউজ:


টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঢেলি করটিয়া গ্রামের ধর্ষিতা প্রতিবন্ধী তরুণী ও তার পরিবার মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকায় ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত একজন জেলহাজতে থাকলেও অপর দুইজন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ গ্রেপ্তার করছেনা। এদিকে, ধর্ষিতা প্রতিবন্ধী প্রসব বেদনা নিয়ে বুধবার(১১ অক্টোবর) টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ধর্ষণ অতঃপর অন্তঃসত্ত্বার শিকার হন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ঢেলি করটিয়াস্থ সাবেক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের বাসার ভাড়াটিয়া ও মির্জাপুর উপজেলার কাটরা গ্রামের মো. লাল মিয়া ও আলো বেগমের মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধি এবং মৃগি রোগে আক্রান্ত তরুণী আঁখি আক্তার(১৭)। মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও ধর্ষিতা ঘটনার বিবরণ ও জড়িতদের নাম প্রকাশ করতে পারেন বলে ধর্ষিতার দেয়া ভাষ্যে প্রকাশ পায়। তিনি জানান, ঘটনায় জড়িত বাসার মালিক ও সাবেক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান, বাসার ভাড়াটিয়া ও কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিন এবং কারখানার দর্জি মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুর নাম। জড়িতদের নাম উল্লেখ করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় অভিযোগ করা হয়। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিন ও দর্জি মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুকে আটক করে টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ। তবে দুইদিন আটক রেখে ২১ সেপ্টেম্বর কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। অপরজন কারখানার দর্জি মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুকে একমাত্র অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গত ২৪ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুমের আদালতে ধর্ষণের শিকার মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণীর দন্ড বিধির ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। জবানবন্দিতে ধর্ষিতা তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয় বলে নিশ্চিত করেন, বিবাদী পক্ষের আইনজীবি মুকুল আক্তার ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জেসমিন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, ধর্ষিতা জবানবন্দি দেয়ার দীর্ঘ ১৭ দিন পরও ঘটনায় জড়িত অপর দুই অভিযুক্তকে অদৃশ্য কারণে তদন্ত কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার গ্রেপ্তার করছেনা। ফলে, মামলার ভবিষ্যত ও ন্যায় বিচার নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে বিচার প্রার্থীর পরিবার। এছাড়াও যে কোন মুহুর্তে মেয়েটির গর্ভপাতের সম্ভাবনা দেখা দিলেও জন্ম নেয়া শিশুর পরিচয় কি হবে এমন প্রশ্নেও দিশেহারা পরিবার ও এলাকাবাসী।
ধর্ষিতার বাবা জানান, তার প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণের মাধ্যমে গর্ভবতী করার ঘটনায় তিন জন জড়িত। তাদের দু’জন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলায় কিছুই হবে না বলে দম্ভোক্তি করছে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় তার মেয়ের ভবিষ্যত অন্ধকার হয়ে গেছে। তিনি ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
টাঙ্গাইল মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জানান, এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার মানসিক প্রতিবন্ধী এবং মৃগি রোগে আক্রান্ত তরুণী। তিনি মামলার আগে শুধু কারখানার দর্জি মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুর নাম উল্লেখ করায় একজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়। তবে গত ২৪ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুমের আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে ধর্ষিতা বাসার মালিক ও সাবেক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান এবং কারখানার দর্জি মো. হামিদ মিয়া ওরফে হামদুর নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, তবে বিনা কারণে যেন কেউ হয়রানির শিকার না হয় সে কারণে তিনি ডিএনএ টেস্টের অপেক্ষায় রয়েছেন। ইতোমধ্যেই তিনি ডিএনএ টেস্ট করার আবেদন করেছেন। ধর্ষিতাকে বুধবার টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গর্ভপাত হলেই শিশুটির ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মূল অভিযুক্ত সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়