আজ- শুক্রবার | ৭ নভেম্বর, ২০২৫
২২ কার্তিক, ১৪৩২ | রাত ৩:১১
৭ নভেম্বর, ২০২৫
২২ কার্তিক, ১৪৩২
৭ নভেম্বর, ২০২৫, ২২ কার্তিক, ১৪৩২

ফেসবুকের কল্যাণে দিনাজপুরের দুর্গা ফিরে পেল পরিবার

দৃষ্টি নিউজ:

ফেসবুকের কল্যাণে হারিয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ বছর পর দিনাজপুরের পাগলী দুর্গা ফিরে পেয়েছে তার পরিবার।

মানসিক ভারসাম্যহীন পাগলী হিসেবে পরিচিত দুর্গাকে ১১ বছর আশ্রয়ে রেখে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আসাদুজ্জামান রনি।

ধুবড়িয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন একটি মেয়েকে তিনি ২০১০ সালের দিকে ধুবড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে দেখেন। মেয়েটি তার নাম-পরিচয় কিছুই বলতে পারছিল না।

তখন তিনি তাকে বাড়িতে নিয়ে আশ্রয় দেন। তিনি নাম- পরিচয়হীন মেয়েটির নাম দেন লাইলী। একই সাথে তিনি মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করতে থাকেন। লাইলী দীর্ঘ আট বছর কোন প্রকার কথা বলতে পারেনি- এক প্রকার বাক প্রতিবন্ধী ছিল।

দীর্ঘ ১১বছর পর এলাকার মানুষের সহযোগিতায় বিশেষ করে নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আওলাদ হোসেন লিটনের মাধ্যমে মেয়েটির পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়। জানতে পারেন লাইলীর প্রকৃত নাম দুর্গা রাণী।

তার স্বামীর নাম রমেশ হরিজন, বাড়ি দিনাজপুরের সস্তীতলার শহীদুল কলোনী। বগুড়া জেলার সান্তাহারের সুইপার কলোনীতে মেয়েটির বাবার বাড়ি।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে দুর্গা রাণীকে তার স্বামী ও তার ভাইদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় মেয়েটির আশ্রয়দাতা আসাদুজ্জামান রনি অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। মেয়েটি যেন বাকি জীবনটা তার পরিবারের সাথে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাতে পারে- সৃষ্টিকর্তার নিকট সেই প্রার্থনা করি।

দীর্ঘ ১১ বছর পর স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে উচ্ছ্বসিত রমেশ হরিজন বলেন, প্রায় ১১ বছর রনি ভাই আমার স্ত্রীকে স্বযতেœ লালন-পালন করে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছেন- এটা মানবতার এক অনন্য উদাহরণ।

তিনি বলেন, আমার দুই মেয়ে তাদের মাকে কাছে পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। রনি ভাইকে ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. আওলাদ হোসেন লিটন জানান, আসাদুজ্জামান রনি যে মানবতা দেখিয়েছে তা সমাজ থেকে এখন প্রায় উবে গেছে।

দিনাজপুরে বসবাসকারী তার ভাই দীলিপ এর সাথে দুর্গা (লাইলী) এর বিষয়ে আলাপ করলে, দিলিপ তার ফেসবুক পেইজে ছবি সহ পোস্ট করে এবং তার ফেসবুক বন্ধুরা পোস্টটি শেয়ার করে।

একপর্যায়ে, হরিজন সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে যোগাযোগ হয় এবং পরিচয় নিশ্চিত হয়ে দুর্গাকে (লাইলী) তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়