টাঙ্গাইলে বই বিনিময় উৎসব
দৃষ্টি নিউজ:

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা পাঠ ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এতে অতিথি ছিলেন লেখক ও গবেষক অধ্যাপক বাদল মাহমুদ, লেখক ও গবেষক ডক্টর আলী রেজা, অধ্যাপক আলীম আল রাজী, প্রাবন্ধিক জহুরুল হক বুলবুল প্রমুখ।
সরেজমিনে দেখা যায়, টেবিলে থরে থরে সাজানো বই। কেউ জমা দিচ্ছেন, কেউ নিচ্ছেন। পড়া শেষে বাসার সেলফে পড়ে থাকা বই জমা দিয়েও কেউ কেউ নিচ্ছেন আরেকটি পছন্দের বই। সংগ্রহ করা যাচ্ছে প্রিয় লেখকের প্রিয় বইটি। সঙ্গে আছে একাডেমিক ও ম্যাগাজিন সেকশন থেকে অফুরন্ত বই বিনিময়ের সুযোগ। কেবল বই দিয়ে বই বিনিময় উৎসবের পুরো দিনটিই ছিল বই বিনিময়ের। উৎসবে বইয়ের ছয়টি স্টল এবং দুটি রেজিস্ট্রেশন বুথ স্থান পায়। ছয়টি স্টলে বিভিন্ন ক্যাটাগরির বই বিনামূল্যে বিনিময় করা হচ্ছে।
আয়োজকরা জানায়, বইকে মানুষের কাছে আরও সহজলভ্য করে তোলা ও বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতেই এ আয়োজন। তাদের পক্ষ থেকে সংগ্রহ করে রাখা হয় এক হাজারের বেশি বই। সারা দিন প্রায় তিন হাজার বই বিনিময় হয়।
উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্পগ্রন্থসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির সহস্রাধিক বই টেবিলে সাজিয়ে রেখেছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা। বইগুলোর পরিবর্তে পাঠকরা তাদের ঘরে পড়ে থাকা বা সাজিয়ে রাখা বইটির বদলে অপঠিত বই নিয়েছেন- এটাই হচ্ছে বই বিনিময়। শিক্ষা ক্ষেত্রে সহায়ক হবে অনেকে এমন বইয়ের খোঁজও করেছেন।
হাজারো বইয়ের ভিড়ে পছন্দের বইটি খুঁজে পেতে একজন বইপ্রেমীর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, লেখকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবটি বই প্রেমীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। বিশেষ করে তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ উৎসবে ভিন্নমাত্রা যোগ করে।
শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদিবা রহমান বই বিনিময় করতে এসে বলেন, ‘ছোট থেকেই বই পড়তে ভালো লাগে। তাই আমার কাছে থাকা বই পড়া শেষে নতুন বই পড়ার আগ্রহ থেকে বই বিনিময় করতে এসেছি। এই উদ্যোগটা অবশ্যই প্রশংসার- আমাদের মতো পাঠকেরা খুব উপকৃত হচ্ছে।’
সরকারি সা’দত কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন ‘আমার বন্ধু ফেসবুকের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বই বিনিময় উৎসবে। তাই ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠান দেখতে এসেছি। এটা ব্যতিক্রম আয়োজন- আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।’
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, ‘পড়া বই ঘরে না রেখে নতুন কিছু জানার আশায় বই বিনিময় করতে পেরে ভালো লাগছে। কারণ এতে নতুন বই পড়তে টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে না। এরকম আয়োজন মাঝে মাঝেই হওয়া প্রয়োজন।’
বাতিঘর আদর্শ পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ও বই বিনিময় উৎসবের প্রধান সমন্বয়ক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বইকে পাঠকের কাছে সহজতর করতে আমাদের এই উদ্যোগ- যা থেকে নতুন প্রজন্মের পাঠক তৈরি হবে। এতে তরুণ ও কিশোররা স্মার্টফোন থেকে বই পড়ার দিকে ধাবিত হবে। প্রথম উদ্যোগে পাঠকের আগ্রহ দেখে তিনি অভিভুত।