আজ- রবিবার | ৯ নভেম্বর, ২০২৫
২৪ কার্তিক, ১৪৩২ | দুপুর ১২:৪২
৯ নভেম্বর, ২০২৫
২৪ কার্তিক, ১৪৩২
৯ নভেম্বর, ২০২৫, ২৪ কার্তিক, ১৪৩২

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল :: কৃষিমন্ত্রী

দৃষ্টি নিউজ:

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস ব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করা হয়েছে তেমনিভাবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতাকারীদেরও পরাজিত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে যেমন ধ্বংস করা যাবে না তেমনি কেউ যদি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে বা ভাঙে তাহলে তাদেরকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো মোকাবেলা করে আবার পরাজিত করব।

তাদেরকে আবার আমাদের পায়ের নিচে পড়ে ক্ষমা চাইতে হবে। কৃষিমন্ত্রী শুক্রবার(১১ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইলের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে টাঙ্গাইল পৌরসভা আয়োজিত টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।

ড. রাজ্জাক বলেন, একাত্তরে পরাজিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা আমাদের পায়ের নিচে অস্ত্র সমর্পণ করেছে। আজকে যারা মনে করছে এ দেশকে পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে, তালেবানীয় আফগানিস্থান বানাবে, ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবে- তাদেরকে আমরা একাত্তরের মতো পরাজিত করব।

এরআগে টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজে ‘কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য যারা ভেঙেছে তাদের কী বিচার হবে?’ সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী তাদের এই কাজ রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এই আইনেই তাদের বিচার হবে। তাদেরকে অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে।’

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরে বিএনপি জড়িত কি-না ও তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এদের সাথে জোট করে ক্ষমতায় এসেছিল। ভাঙচুরে অবশ্যই তাদের যোগসাজশ আছে। কিন্তু বিচার করতে গেলে প্রমাণ লাগে। প্রমাণসাপেক্ষে অবশ্যই তাদের বিচার হবে। তারা যদি অর্থ দিয়ে থাকে বা অন্যভাবে সহযোগিতা করে থাকে তবে অবশ্যই তাদের বিচার হবে। যারা যারা অপরাধ করেছে তারা কেউই রেহাই পাবে না।’

ড. রাজ্জাক আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশটিকে শুধু স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে চান নি, তিনি মস্বাধীনতা যুদ্ধকে বলেছিলেন মুক্তির সংগ্রাম। দেশটিকে তিনি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ সব দিক দিয়ে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং ন্যায়-সমতার ভিত্তিতে একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তি দেশিয়-আন্তর্জাতিক ঘাতকচক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।

তারপর থেকে ২১ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতা হলো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা ও ভাঙচুর।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ভাস্কর্য ও মূর্তি এক নয়। ভাস্কর্যের একটা নান্দনিক দিক রয়েছে- এটা একটা শিল্প। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে যাতে করে তাঁর আদর্শ ও চেতনাকে এ দেশের ভবিষ্যত বা আগামি প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা যায়, জাগরূক রাখা যায়।

ভাস্কর্য হচ্ছে স্মৃৃতিচিহ্ন বা স্মারক। এর মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে এবং মানবপ্রেমে ও মানবসেবায় ব্রতী হবে।

https://www.youtube.com/watch?v=4WssQAA-LBs

প্রকাশ, ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে টাঙ্গাইলকে মুক্ত করে।

১১ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিরাট বাহিনী নিয়ে টাঙ্গাইল পুরনো শহরে প্রবেশ করেন এবং থানা চত্বরে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

আলোচনা সভায় টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরনের সভাপতিত্বে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক, সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোটমনির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়