দৃষ্টি নিউজ:
ঈদে বাড়ি যাওয়া ও শেষে ফেরার সময় যানজটে নাকাল হওয়া যেন সড়কপথের যাত্রীদের জন্য নিয়মে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য সড়কের মতো ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রতিবছর এ মহাসড়ক হয়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার গাড়ির যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ ছাড়া সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস প্রতি বৃহস্পতিবারও এ মহাসড়কে ব্যাপক যানজট হয়। তবে এবার এ সড়ক চার লেন করার পাশাপাশি সড়কের দুই পাশে মাটি ফেলে ভরাট করায় যানজটে পড়তে হবে না বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
এদিকে, সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকলে এবারও ঈদে নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছানো কিংবা বাড়ি থেকে ফেরা অসম্ভব বলে মনে করেন গাড়ির চালকরা। ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের অন্তত ২০টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। তাই এই সড়কে গাড়ির চাপ থাকে বেশি। এ কারণে প্রতিবছর ঈদ মৌসুমে এ সড়কে যানজট লেগে থাকে।
এ ছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চার লেনের কাজসহ ধেরুয়া রেল ক্রসিংয়ে উত্তরবঙ্গের ১২টি ট্রেন দিনে ২৪ বার আসা-যাওয়া করে এবং এ কারণে এই রেল ক্রসিংয়ে মহাসড়কের যানবাহনগুলোর প্রায় দেড় ঘণ্টা নষ্ট হয়। এটিও যানজটের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কের অনেক অংশে ভেঙে চার লেনের কাজ করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় সড়কে খানা-খন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এসব জায়গায় যান চলে অত্যন্ত ধীর গতিতে।
ফলে টাঙ্গাইলের সীমানায় মির্জাপুরের গোড়াই থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত অন্তত ৪৫ কিলোমিটার এলাকার পাকুল্লা, জামুর্র্কী, করটিয়া পৌংলী ও এলেঙ্গাতে প্রায় সময়ই গাড়ির ধীর গতি থাকে। দুর্ঘটনা ঘটলেও যানজট সৃষ্টি হয়।
এ সড়কে চলাচলকারী মাহী এন্টারপ্রাইজের চালক রায়হান আলী, নিরালা পরিবহনের চালক মনজু মিয়া বলেন, যদি পুলিশ শুধু যানজট লাগার পর তৎপরতা শুরু না করে সবসময়ই দায়িত্ব পালন করে তাহলে যানজট কম হবে। ঢাকা-টাঙ্গাইল বপ্রন্ধু সেতু সড়কটি চারলেন না হওয়া পর্যন্ত যানজট থাকবে বলে টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মীর লুৎফর রহমান লালজু মনে করেন। তিনি বলেন, চারলেনের কাজ চলা এবং আগের সড়কের অবস্থাও ভালো না থাকার কারণে এবছরও ঈদে যানজট থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
দক্ষিণ এশীয় উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সহযোগিতার (সাসেক) সড়ক সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক জিকরুল হাসান বলেন, নির্মাণ কাজ চলা অবস্থায় যানচলাচলে কিছুটা হলেও বিঘ্ন হতে পারে। একথা মাথায় রেখেই ঈদের কয়েকদিন আগ থেকে চার লেনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা দরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক তাদের স্বেচ্ছাসেবকও থাকবে বলে জানান তিনি। অন্য বছরের চেয়ে এবার ঈদে ঘরমুখো মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারবে বলে মনে করেন টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম নূর-এ-আলম।
এদিকে, মহাসড়কের নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মাহবুব আলম।
ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি যানচলাচল, চার লেনের নির্মাণ কাজ চলা, সড়ক দুর্ঘটনা ও যান বিকল হওয়াসহ নানা কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কে সাপ্তাহিক কর্মদিবসের শেষদিন বৃহস্পতিবার সকালে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে স্বীকার করেন এসপি মাহবুব।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বলেন, আর যানজটে আটকা পড়ে যাত্রীদের যাতে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেজন্য জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ রাস্তায় দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে।