আজ- বৃহস্পতিবার | ১৩ নভেম্বর, ২০২৫
২৮ কার্তিক, ১৪৩২ | বিকাল ৫:২৩
১৩ নভেম্বর, ২০২৫
২৮ কার্তিক, ১৪৩২
১৩ নভেম্বর, ২০২৫, ২৮ কার্তিক, ১৪৩২

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি :: ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কে লিকেজ

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের নদীগুলোতে বৃহস্পতিবার(২ জুলাই) দিনগত রাত থেকে আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের ৪০টি স্থানে লিকেজ দেখা দিয়েছে। লিকেজ বন্ধ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, শুক্রবার(৩ জুলাই) সকাল ৬টায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৫ সেণ্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এছাড়া একই দিন সকাল ৯টায় ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৮ সে.মিটার ও ঝিনাই নদীর পানি ৪৯ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

স্থানীয়রা জানায়, বুধবার(১ জুলাই) থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত যমুনায় পানি কমতে থাকলেও বৃহস্পতিবার দিনগত রাত থেকে আবার পানি বাড়তে থাকে। পানি বাড়ার সাথে সাথে জেলার বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।

ইতোমধ্যে জেলার ৬টি উপজেলার ১০১টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গ্রামের অভ্যন্তরীণ কাঁচা সড়কগুলো তলিয়ে মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী ও গোপালপুর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের এক লাখ ২৪ হাজার ৫৭১জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারসহ গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর ফসলী জমি। এছাড়া ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এক হাজার ১৮৯টি ঘরবাড়ি।

অপরদিকে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ১৬৩ মেট্রিকটন জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা বিতরণ শুরু করেনি কর্তৃপক্ষ।

পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা নদী রক্ষা বাঁঁধের বামতীরে ভূঞাপুরের গারাবাড়ি এলাকায় লিকেজ দেখা দেওয়ায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে বাঁধটি। ইতোমধ্যে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের বিভিন্ন স্থানে ৪০টি লিকেজ দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে তাড়াই ও গাড়াবাড়ি সড়কে ১০টি পয়েন্ট অত্যাধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ভূঞাপুর উপজেলার তাড়াই, গাড়াবাড়ি, চুকাইনগর, অর্জুনা ও কুঠিবয়ড়া সহ ৭টি গাইড বাঁধ পয়েন্ট দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ লিকেজ বন্ধ করতে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড দিনরাত কাজ করছে।

পাউবো’র কর্মীরা লিজেক বন্ধে বালি ও জিওব্যাগ ব্যবহার করছে। জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কে বালি ও জিওব্যাগ মজুদ করে রাখা হয়েছে। এ সড়ক ভেঙে গেলে টাঙ্গাইলের গোপালপুর, ঘাটাইল, মধুপুর ও কালিহাতী এ চারটি উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সংসদ্য তানভীর হাসান ছোট মনির, ময়মনসিংহ সার্কেলের তত্ত্বাবধাক প্রকৌশলী মো. শাহজাহান সিরাজ, টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভাঙনরোধে পাউবো’র কার্যক্রম ও বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

টাঙ্গাইলের সব নদীতে আবার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, গোপালপুর ও নাগরপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্ন ও চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া, হুগড়া, কাতুলী, মামুদনগর; ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা, অর্জুনা, গোবিন্দাসী, নিকরাইল; কালিহাতী উপজেলার দুর্গাপুর, গোহালিয়াবাড়ি, সল্লা, দশকিয়া; গোপালপুর উপজেলার হেমনগর, নগদাশিমলা, ঝাউয়াইল এবং নাগরপুর

উপজেলার সলিমাবাদ, ভাড়রা, মোকনা, পাকুটিয়া ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। বন্যা কবলিত ও চরাঞ্চলের মানুষ তাদের বাড়ির ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। লক্ষাধিক পরিবার ইতোমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, যমুনায় পুনরায় পানি বৃদ্ধির ফলে তারাকান্দি-ভূঞাপুর-টাঙ্গাইল সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে লিকেজ দেখা দিয়েছে।

সেগুলো বন্ধ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা সড়কের লিকেজ ও বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

প্রকাশ, গত বছরের ১৮ জুলাই রাতে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের ভূঞাপুর পৌর এলাকার টেপিবাড়ী গ্রামের মলাদহ নামক স্থানে লিকেজ হয়ে বন্যার পানিতে ৫০ মিটার সড়ক ভেঙে যায়। ফলে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়