দৃষ্টি নিউজ:

১৯৬৯ সালের এই দিনে(৫ ডিসেম্বর) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রস্তাবনায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ নামকরণ করা হয়। বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দ’র রুপসী বাংলা অথবা বঙ্কিমের বঙ্গদেশই আজকের বাংলাদেশ।
ইতিহাস মতে, বাংলা শব্দের উৎপত্তি সংস্কৃত বঙ্গ থেকে। আর্যরা এই অঞ্চলকে বঙ্গ বলে ডাকতো। মুসলমান শাসনামলে বিশেষ করে ১৩৩৬ থেকে ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলটি পরিচিতি পায় বাঙাল বা বাঙালাহ বলে। শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলা বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আসাম নিয়ে গড়ে তোলেন বঙ্গ প্রদেশ। ব্রিটিশ শাসনামলে এই অঞ্চলের নাম হয় বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর বাংলার পশ্চিম অংশ হয়ে যায় পশ্চিম বঙ্গ এবং পূর্ব অংশ হয়ে যায় পূর্ব বাংলা। ১৯৪৭ সালে বঙ্গ-প্রদেশ ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তানে যুক্ত হলে পূর্ব বাংলা হয়ে যায় পূর্ব পাকিস্তান। ১৯৫৭ সালে করাচীতে পাকিস্তানের গণপরিষদের তরুণ সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান ’পূর্ব পাকিস্তান’ নামের প্রতিবাদ করেন। এ নাম রাখতে হলে বাংলার মানুষের জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব করেন তিনি। প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করার দাবি জানান।
১৯৬৯ সালে আইয়ুব পতন আন্দোলনের সময় গণঅভ্যুত্থানের স্লোগান ছিল- ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। তখনই প্রথম পূর্ব বাংলাকে ’বাংলাদেশ’ নামে ডাকা হয়। ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় শেখ মুজিবুর রহমান ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে ‘বাংলা’ আর স্বাধীন দেশের আন্দোলন সংগ্রাম থেকে ‘দেশ’ এক করে ঘোষণা করেন “বাংলাদেশ”।
১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর প্রণীত ও গৃহীত প্রথম সংবিধানে দেশটির সাংবিধানিক নাম দেয়া হয় ‘বাংলাদেশ’ এবং মুজিবনগর সরকারও বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার হিসেবেই পরিচিতি পায়।
