আজ- শনিবার | ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫
১১ মাঘ, ১৪৩১ | ভোর ৫:১৮
২৫ জানুয়ারি, ২০২৫
১১ মাঘ, ১৪৩১
২৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১ মাঘ, ১৪৩১

বাবা হত্যার বিচার চাওয়ায় ছেলেকেও হত্যার হুমকি

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের কালিহাতীর মহিষজোড়া গ্রামের সমাজসেবক আব্দুল খালেক হত্যাকান্ডের ঘটনা তদন্তে সিআইডি’র বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত খালেকের ছেলে মো. তোয়াজ আলী। তিনি বলেন, বাবাকে হত্যার বিচার চাওয়ায় অভিযুক্তরা তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। অথচ ময়নাতদন্ত ও সাখ্য-প্রমাণ থাকা সত্বেও সিআইডি ফাইনাল রিপোর্ট (এফআরটি) দিয়েছে।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে মঙ্গলবার(২৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. তোয়াজ আলী জানান, তার বাবা আব্দুল খালেক(৭৫) এলাকার একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন। গ্রাম ও গ্রামবাসীর কল্যাণে নিজেকে সবসময় নিয়োজিত রাখতেন। গ্রামের মসজিদের সভাপতিও ছিলেন তিনি। মহিষজোড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও মসজিদের দখলে থাকা খাস পুকুর ও ঈদগাহের জায়গা-জমি নিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী আব্দুস ছাত্তার ও নূরুল ইসলাম গংদের সাথে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। গ্রামের মানুষের স্বার্থে আব্দুস ছাত্তার ও নূরুল ইসলাম গংদের অন্যায় কার্যকলাপের তীব্র প্রতিবাদ করেন তার বাবা। এজন্য তাদের চক্ষুশুলে পরিণত হন। গত ২০১৬ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় মাথা ও ঘাড়ে ভোতা অস্ত্রের আঘাত এবং শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়। ওই বছরের ২৫ অক্টোবর তিনি একই গ্রামের আব্দুস ছাত্তার ও নুরুল ইসলাম সহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১৫-২০ জনকে অভিযুক্ত করে কালিহাতী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি প্রথমে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত শুরু করেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাটি টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি) উপর ন্যস্ত করা হয়। ডিবি তদন্ত কাজ শুরু না করতেই ঢাকাস্থ অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল (সিআইডি)-এর নির্দেশে সিআইডি টাঙ্গাইল-এর উপর তদন্তভার অর্পণ করা হয়। টাঙ্গাইলের এএসপি(সিআইডি) মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তার বাবার মরদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে আঘাতজনিত কারণেই আব্দুল খালেকের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, টাঙ্গাইলের সিআইডি একটি প্রভাবশালী মহলের চাপে তারা সুষ্ঠুভাবে তদন্তকাজ সম্পন্ন করেনি। আসামীরা খুব প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। তারা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়েও এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে বলেছে, মামলা তুলে না নিলে আমার অবস্থা আমার বাবার চেয়েও খারাপ হবে। এ বিষয়টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) মো. আবুবক্কর সিদ্দিকীকে বারবার অবহিত করা হলেও তিনি কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেননি। বরং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি মো. আবুবকর সিদ্দিকী অভিযুক্তদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে একটি মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, কাল্পনিক, মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ একটি ফাইনাল রিপোর্ট(এফআরটি) আদালতে দাখিল করেন। তিনি ওই মিথ্যা ফাইনাল রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেন। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর(সোমবার) টাঙ্গাইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মোকদ্দমা দায়ের করেছেন। এজন্য অভিযুক্তরা তাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। তারা বলে বেড়াচ্ছে, তিনি এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে গেলে তাকেও বাবার মতো হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। বর্তমানে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিারপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বাবা হত্যার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মহিষজোড়া মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আক্কাস আলী, সেক্রেটারি মো. মহির উদ্দিন সিকদার, উপদেষ্টা মনিরুজ্জামান মিন্টু ও মামলার বাদির বড় ভাই মো. আলতাফ হোসেন সহ বিভিন্ন প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়