
দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইল শহরের কাগমারায় বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় ভাই মাহিম নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন আশিককে হত্যা করে। পরে আশিকের মরদেহ বাড়ির পাশে লৌহজং নদীতে কচুরি পানার নিচে ফেলে দেন।
টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মাহিম (১৯) এ কথা জানান। বৃহস্পতিবার (৭ মে) বিকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রূপম কুমার দাশ গ্রেপ্তারকৃত মাহিমের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে সন্ধ্যায় তাকে টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে মাহিম জানিয়েছেন ঘটনার দিন তার বোনকে দেওয়া মোবাইল ফোন ফেরত নেওয়ার জন্য মামুনকে খবর দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর মামুন ফোন ফেরত নিতে মাহিমদের বাসায় যান। মাহিম আগে থেকেই ছুরি চেয়ারের পিছনে রেখেছিলেন। মামুনের পাশে বসে কথা বলার এক পর্যায়ে মাহিম ছুরি দিয়ে বুকে আঘাত করেন।
এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে গভীর রাতে মরদেহ বাসার পাশে লৌহজং নদীতে কচুরি পানার নিচে ফেলে রাখেন। গ্রেপ্তারকৃত মাহিমের মা ও বোনকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, শহরের কাগমারা এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকায় পুলিশে কর্মরত রাশেদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (১৮) গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যার পর নিখোঁজ হন। তার পারিবারিক সূত্র জানায়, কয়েকমাস আগে তাদের প্রতিবেশি মাহিমের বোনের সঙ্গে মামুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মামুন তার প্রেমিকাকে একটি মোবাইল কিনে দেন। এটা জানতে পেরে প্রেমিকার ভাই মাহিম ক্ষুব্ধ হন।
নিখোঁজের দিন মোবাইল ফোনটি ফেরত নেওয়ার জন্য মাহিম তাদের বাড়িতে মামুনকে ডেকে পাঠান। ওইদিন ফোন ফেরত আনতে গিয়েই মামুন আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরে গত ৫ মে সন্ধ্যায় লৌহজং নদী থেকে মামুনের মরদেহ ভেসে উঠে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহটি উদ্ধার করে।
মরদেহ উদ্ধারের পরেই পুলিশ মাহিম, তার মা ও বোনকে আটক করে। ৬ মে মামুনের মরদেহ দাফনের পর তার মা আনোয়ারা বেগম বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহিম তার বোনের প্রেমিক মামুনকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। পরে আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হন। বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে তিনি জবানবন্দি দেন। মাহিম ঢাকার একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত।
