দৃষ্টি নিউজ:

এবারের বন্যায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের টেপিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বসার পরিবেশ না থাকায় এখনও পর্যন্ত পাঠদান চালু করা হয়নি।
জানাগেছে, গত ১৮ জুলাই ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কে টেপিবাড়ি নামকস্থানে ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এ সময় আকস্মিক স্রোতে টেপিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের দুইটি আধাপাকা টিনের ঘর ও আসবাবপত্র মুহূর্তেই ভেসে যায়। মাঠ দিয়ে স্রোত প্রবাহিত হওয়ায় গভীর খাদে পরিণত হয়ে ঝুঁকির মুখে পড়ে বিদ্যালয়ের একটি তিনতলা ও একতলা ভবন। বিজ্ঞানাগারটিও স্রোতের তোড়ে ভেঙে পড়ে।

সরেজমিনে জানা যায়, ভূঞাপুর পৌরসভার টেপিবাড়ি এলাকায় ১৯৯২ সালে উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরুতে টিনের ঘর থাকলেও ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে তিনতলা বিশিষ্ট ৯ কক্ষের একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়ে আশপাশের কমপক্ষে দশটি গ্রামের ৬৫০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছেন।টেপিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও মাঠ দিয়ে অল্প পরিমাণে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির স্রোতে বিদ্যালয়ের ১০০ শতাংশের খেলার মাঠটি গভীর খাদে পরিণত হওয়ায় সেখানে স্থানীয়রা জাল ফেলে মাছ ধরছেন।
বন্যার পানি কমলেও বিদ্যালয়ের তিন তলা ভবনের সিঁড়ির নিচ দিয়ে প্রায় ১০ ফুট গভীর হয়ে মাটি ধসে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভবনটি চরম হুমকিতে রয়েছে। ওই ভবনে ক্লাস নেয়া সম্ভব নয় বলে মতামত দিয়েছেন প্রকৌশলীরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল ইসলাম জানান, বন্যার পানিতে বিদ্যালয়ের কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একটি নবনির্মিত ওয়াশব্লক ও দুটি আধাপাকা টিনসেড ঘর, টেবিল-চেয়ার, বেঞ্চসহ ঘরের সব আসবাবপত্র পানির স্রোতে ভেসে গেছে। শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। বিদ্যালয়ের তিনতলার মূলভবনের সিঁড়ির নিচে ধসে গিয়ে বড় গর্ত হয়েছে।তিনি আরো জানান, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি পূর্ণনির্মাণ বা নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় এটি এখন সংস্কারেরও অযোগ্য। নতুন ভবন নির্মাণ করা না হলে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

ভূঞাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় টেপিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তিনি অবগত। বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
শিক্ষা কর্মকর্তা আরো জানান, ভূঞাপুরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় টেপিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়সহ উপজেলার ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬টি দাখিল মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পানি নেমে যাওয়ায় অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান শুরু করা হলেও টেপিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে।
