দৃষ্টি নিউজ:
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা দলের নাম ব্যবহার করে গরীবের জন্য প্রদত্ত সরকারের ভিজিএফ প্রকল্পের ১০ কেজির চালে ভাগ বসাচ্ছেন। তারা শ’ শ’ স্লীপ হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফলে অসংখ্য অসহায়, দুঃস্থ ও হতদরিদ্র লোকজন বঞ্চিত হচ্ছে। কতিপয় নেতাকর্মীরা তাদের স্বজনরা চাল উত্তোলন করে প্রকাশ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার(পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে ভিজিএফ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১০ হাজার ২৯৫জন অহসহায় ও হতদরিদ্রের মাঝে বিতরণের জন্য ঈদ উপহার হিসেবে প্রায় ৩২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে অলোয়া, গাবসারা ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতবরণ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর ঘুরে অসংখ্য দুঃস্থ ও হতদরিদ্রদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা পরিষদের বারান্দায় ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে ভিজিএফ প্রকল্পের(ঈদ উপহার) ১০ কেজি চালের একটি স্লীপের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে- কিন্তু পরিষদ থেকে তাদের কোনো স্লীপ দেওয়া হচ্ছে না।
শুধু গোবিন্দাসীতে এমন অনিয়ম নয়- উপজেলার ফলদা, অর্জুনা ও নিকরাইলেও একই চিত্র। চেয়ারম্যানদের চাপ সৃষ্টি করে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কতিপয় নেতাকর্মী শ’ শ’ ভিজিএফের স্লীপ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বঞ্চিতরা অভিযোগ করেন, মেম্বারদের কাছে গেলে তারা জানায় মাত্র কয়েকটি ভিজিএফের স্লীপ পেয়েছিলেন। কাকে রেখে কাকে দিবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। তারা আরও জানান, তারা হতদরিদ্র ও গরীবরা চাল পাচ্ছেন না। বিএনপির নাম করে তাদের দলীয় নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা সরকারের ঈদ উপহারের চালে ভাগ বসিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক ইউপি সদস্য জানায়, ভিজিএফ প্রকল্পের(ঈদ উপহারের) মাত্র ৩০-৩৫ টি করে স্লীপ দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাদেরকে দিয়েছেন। বাকিগুলো কি করেছেন- তা তিনিই জানেন।
গোবিন্দাসী ইউপির দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন জানান, মেম্বারদের ৩০টি করে স্লীপ দেওয়া হয়েছে- তিনি দুঃস্থদের দেওয়ার জন্য ১৫০টি রেখেছেন, প্রতিটি ওয়ার্ড বিএনপি ৫০টি করে স্লীপ নিয়েছে। এর বাইরে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাকিগুলো বণ্টন করে নিয়েছে।
ফলদা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবু সাঈদ ওরফে স্বপন জানান, তিনি নিজে বিতরণের জন্য দুইশ’ স্লীপ নিয়েছেন। উপজেলা পরিষদ থেকে বিতরণের জন্য দেওয়া হয়েছে দুইশ’। দলীয় নেতাকর্মীরা ৬শ’ স্লীপ নিয়েছে এবং বাকিগুলো মেম্বাদের দেওয়া হয়েছে।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোছা. পপি খাতুন জানান, প্রকৃত দুঃস্থ ও হতদরিদ্ররা যেন সরকারের ঈদ উপহার পায় এবং এর কোনো ব্যতয় যেন না ঘটে মর্মে চেয়ারম্যান-মেম্বাদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরও কোনো ধরণের অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।