আজ- সোমবার | ১৭ নভেম্বর, ২০২৫
২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | রাত ১২:৫৭
১৭ নভেম্বর, ২০২৫
২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২
১৭ নভেম্বর, ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

মধুপুরের টেলকী-শোলাকুড়ি সড়কের বেহাল দশা ॥ ১০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার টেলকী-লহুরিয়া-শোলাকুড়ি সড়ক বেহাল হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

কাঁচা সড়কটির বেহাল দশার কারণে ১০ গ্রামের গারো সম্প্রদায় সহ স্থানীয়রা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

এলাকাবাসী জানায়, মধুপুরের টেলকী-লহুরিয়া-শোলাকুড়ি লাল মাটির কাঁচা সড়কে সামান্য বৃষ্টির পরই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। স্থানীয় কাকড়াগুনি, জয়নাগাছা, বেদুরিয়া, বন্দরিয়া, শোলাকুড়ি, হরিণধরা, জালাবাদা, গায়রা, টেলকি, সাধুপাড়া গ্রাম সহ আশপাশের এলাকার মানুষ ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে।

সাম্প্রতিক বৃষ্টির কারণে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য থাকায় কৃষি নির্ভর এতদাঞ্চলের কৃষকরা উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিয়ে বিপাকে রয়েছে।

কৃষিপণ্য পরিবহন করতে দ্বিগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এছাড়া এ এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে কলা ও আনারসের পাতা থেকে আঁশ(ফাইভার) তৈরির কারখানা রয়েছে। এ কারখানার কাঁচামাল সংগ্রহ ও তৈরিকৃত পণ্য পরিবহনেও সমস্যা হচ্ছে।

সরজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ সড়কে টেলকী থেকে গায়রা পর্যন্ত ১ কি.মি. ও মধুপুর শালবন পাড়ি দিয়ে কাকড়াগুনি ব্রিজ থেকে বেদুরিয়া পর্যন্ত ১ কি.মি. পাকা হয়েছে।

বেদুরিয়া থেকে শোলাকুড়ি পর্যন্ত ৭ কি.মি. এবং মধুপুর বনের অংশে গায়রা থেকে কাকড়াগুনি পর্যন্ত প্রায় ৩ কি.মি. সড়ক পাকা না হওয়ায় ১০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

ওই এলাকায় আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস বেশি। কৃষি ফসল উৎপাদনের জন্য এলাকার সুনাম রয়েছে। এ এলাকায় প্রচুর কলা, আনারস, পেঁপে, আদা, হলুদসহ নানা কৃষি ফসল জন্মে থাকে।

সড়কটি টেলকী হয়ে মধুপুর ও ময়মনসিংহ যাতায়াতের জন্য স্থানীয়দের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কৃষিপণ্য বাগান থেকে কমদামে বিক্রি করতে হয়। বর্ষাকালে কাঁচা সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়।

যানবাহন চলাচল এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পায় না।

কাকড়াগুনি গ্রামের বাসিন্দা ও আঁশ তৈরির কারখানার স্বত্ত্বাধিকারী মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বর্ষাকালে কারখানার মালামাল ও কৃষি ফসল নিয়ে দুর্ভোগের মাত্রা কয়েকগুন বেড়ে যায়। শুস্ক মৌসুমেও বাড়তি পরিবহণ খরচ বহন করতে হয়। তিনি সড়কটি দ্রুত পাকাকরণের দাবি জানান।

গারো ছাত্র ফেডারেশনের মধুপুর শাখার আহ্বায়ক তুষার নেকলা জানান, এ সড়কটি ১০ গ্রামের মানুষের মধুপুর শহরে যাতায়াতের প্রধান সড়ক। বর্ষাকালে সড়কের অবস্থা বেহাল থাকার কারণে জরুরি প্রয়োজনে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এলাকার উৎপাদিত কৃষি পণ্য কম দামে বিক্রি করতে হয়।

জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি মি. ইউজিন নকরেক জানান, সড়কটি পাহাড়ি এলাকার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিপণ্যের পরিবহণ সহজতর করতে তিনি সড়কটি পাকাকরণের দাবি জানান।

শোলাকুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি পাকা না হওয়ায় স্থানীয়দের চলাচল ও উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়া কঠিন। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সড়কটি পাকাকরণ জরুরি।

মধুপুর উপজেলা প্রকৌশলী(এলজিইডি) বিদ্যুৎ কুমার দাস জানান, বন বিভাগের আপত্তির কারণে সড়কটি প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগ সড়কটি পাকাকরণে লিখিত অনাপত্তি দিলে প্রকল্পভূক্ত করে পাকাকরণ করা হবে।

টাঙ্গাইলের সহকারী বন সংরক্ষক (উত্তর) জামাল হোসেন তালুকদার জানান, বনের ভেতরে বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া সড়ক পাকাকরণ করা যায় না। বন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে সড়ক পাকাকরণ করা যেতে পারে।

শেয়ার করুন স্যোশাল মিডিয়াতে

Facebook
Twitter
LinkedIn
X
Print
WhatsApp
Telegram
Skype

সর্বশেষ খবর

এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়