দৃষ্টি ডেস্ক:
যারা মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন- তাদের পক্ষে চট করে মিষ্টি ছেড়ে দেওয়া সহজ নয়। পেট সম্পূর্ণ ভরা থাকলেও সামনে নরম তুলতুলে গোলাপজামুন, রসগোল্লা, পান্তুয়া দেখলে অনেকেই নিজেকে সামলাতে পারেন না। মনের মধ্যে তখন শুধু খাই-খাই অবস্থা!
দুপুরে খাওয়ার পর একটা মিষ্টি, রাতে খাবারের শেষপাতে চকোলেট কেক, অফিসে কাজের ফাঁকে বিকালে খিদে পেলেই কুকিজ বা বিস্কুটের হাতছানি! মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। অথচ সব রোগ-বালাইয়ে যম কিন্তু এই মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস।
তা-ও যদি কেউ মনের জোরে মিষ্টি-চকোলেট-আইসক্রিম ছেড়েও দেন, তা হলেও চায়ে চিনি দেওয়া বা সকাল-বিকেল কেক-বিস্কুট খেয়ে ফেলা বন্ধ একেবারে বন্ধ করে দেওয়া বেশ কঠিন। ছেড়ে দিলেও হঠাৎ হঠাৎই মিষ্টির জন্য মন ছটফট করতে শুরু করে।
অনেক সময় দীর্ঘ সময় ধরে মিষ্টি না খেলে মন বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। তখন মনে হয়, এক টুকরো চকোলেট খেয়েই ফেলি! কিন্তু বোঝার আগেই হয়তো গোটা চকোলেটটাই শেষ করে ফেলেন। ফলে ওজন বেড়ে যায় দ্রুত। তার ওপর শরীরে বিভিন্ন রোগও বাসা বাঁধে।
মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে কখন বেশি হয়?
* শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে
* ঘুম কম হলে
* মানসিক চাপ বেশি হলে
* শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে
পুষ্টিবিদদের মতে, মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে কিন্তু মূলত মনের খিদে, শরীরের নয়। খুব খিদে পেলে যে মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করে তেমনটা কিন্তু নয়। বরং আমাদের মন ভালো করার জন্যেই মূলত মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে জাগে। তাই একটু সতর্ক থাকলেই চিনি বাদ দিতে পারবেন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে। কীভাবে তা সম্ভব, রইলো টিপস।
* যখন মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে করবে তখন এক গ্লাস পানি পান করতে পারেন। এতে পেট ভরে যায়, মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে কমে। এছাড়া টাটকা ফলের রসও খেতে পারেন।
* নিয়মিত মাল্টিভিটামিন খেলে শরীরে জরুরি পুষ্টিগুণের ঘাটতি হবে না। তা হলে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতাও কমে যাবে। তবে ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই খান। মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে মৌরি খেতে পারেন, তাতেও লাভ হয়।
* আমাদের স্বভাব দুপুর কিংবা রাতে একেবারে ভরপেটে খাওয়ার। আর বাকি সময়টা খিদে পেলেও খিদে চেপে রাখার। অল্প মাত্রায় বারে বারে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। খালি পেটে থাকবেন না। খিদের মুখে সামনে মিষ্টি দেখলে বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা তৈরি হয়।
* ডায়েটে কার্বোবাইড্রেট কিংবা ফ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন বেশি করে খান। মাছ-মাংস বা ডিম খেলে অনেক ক্ষণ পেট ভরা থাকে। খিদেও কম পায়। খিদের মুখে সেদ্ধ ডিম খেতে পারেন। তা হলে মিষ্টি জিনিস খাওয়ার প্রবণতা দূর হয়। এছাড়া ড্রাই ফ্রুটসও খেতে পারেন। বাদামের সঙ্গে কয়েকটা কিশমিশ থাকলে মনও ভরে যাবে, শরীরের ক্ষতিও হবে না।
* মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে হলে ফল খেতে পারেন। স্ট্রবেরি, কমলালেবু, আঙুরের মতো মিষ্টি ফল খেলে আর চিনি খাওয়ারও ইচ্ছে করবে না। মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে পিনাট বাটার দিয়ে কলা খেতে পারেন। এছাড়া দইয়ের সঙ্গে সব ফল মিশিয়ে ফ্রুট সালাদ বা ফ্রুট চাট করেও খেতে পারেন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার জন্য লেখা হয়েছে। মিষ্টি খাবেন না-কি বাদ দেবেন তার জন্য অবশ্যই ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিতে হবে।