আওয়ামীলীগের সাবেক এমপির পিএস
দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলে আওয়ামীলীগের এক সাবেক এমপির পিএসকে সকালে গ্রেপ্তারের পর বিকালেই আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। বিষয়টি জেলায় ‘টক অব দ্যা টাউনে’ পরিণত হয়েছে।
জানাগেছে, টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে হামলা মামলার প্রধান আসামি সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারির পিএস(পারসোনাল সেক্রেটারী) শান্ত ইসলাম। এছাড়াও শান্ত ইসলামের বিরুদ্ধে আগে থানায় বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার(২৫ অক্টোবর) সকালে ওই মামলায় শান্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে বিকালেই তিনি জামিনে মুক্ত হন। অথচ একই মামলায় ইতোপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত অন্য আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালিহাতী পৌরসভার সিলিমপুর মধ্যপাড়া এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারির পিএস শান্ত ইসলামকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। এরপর তাকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আনন্দ মিছিলে হামলা মামলার এক নম্বর আসামি হিসেবে পুলিশ শান্তকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠায়। আদালত বন্ধ থাকলেও এদিন বিকালেই সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলামের আদালতে তোলার পর তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, আসামিকে আটকের পর নির্দিষ্ট মামলার বিবরণ উল্লেখ করে পুলিশ আদালতে পাঠিয়েছিল। জামিন হওয়ার বিষয়টি সম্পুর্ণ আদালতের এখতিয়ার।
এরআগে গত ১৮ আগস্ট শান্ত ইসলামকে প্রধান আসামি করে কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেন হামলায় আহত শিক্ষার্থী মেহেরাব ইসলাম তারেকের বাবা মমিনুল ইসলাম। সম্প্রতি ওই মামলার আরও কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হলেও তাদের জামিন বাতিল হয়। তবে মামলার প্রধান আসামি ও কয়েকটি মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তার জামিন হওয়ার ঘটনায় হতবাক মামলার বাদী।
মামলার বাদী মমিনুল ইসলাম জানান, আসামি আটক হওয়া বা জামিনের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি জানতে পেরেছেন সে আটক হয়েছে। আইনের বিষয়ে তার কিছু বলার নেই।
টাঙ্গাইল কোর্টের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খলিলুর রহমান জানান, থানা পুলিশ আসামি শান্ত ইসলামকে আদালতে পাঠিয়েছে। বন্ধের দিন একজন বিচারক থাকেন। পরে তাকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। তিনি ও রাষ্ট্রপক্ষ থেকেও আদালতে তার জামিনের বিরোধিতা করেছিলেন। জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের বিচারকের।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, শান্তকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আনন্দ মিছিলে হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এ মামলায় তিনি প্রধান আসামি ছিলেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে। তবে সেগুলোতে তিনি জামিনে আছেন। জামিনের বিষয়টি আদালতের বিষয়।
তিনি আরও জানান, একই মামলায় আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু জানামতে সেদিনই তাদের জামিন হয়নি।
প্রকাশ, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সাবেক এমপি সোহলে হাজারির হয়ে শান্ত ইসলাম বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আওয়ামী লীগের কোনো পদ না থাকলেও ক্যাডার হিসেবে তিনি পরিচিত।
তার বিরুদ্ধে কালিহাতী উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব, বাসস্ট্যান্ডে এলাকায় ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় সে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবেও পরিচিত ছিল। বিভিন্ন ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কয়েকদিন মামলা রয়েছে।